তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে পয়েন্ট অব সেল বা তামাকের বিক্রয় কেন্দ্রে যে কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন, প্রণোদনা, পুরস্কার বিতরণ বা উপহার প্রদান ও তামাক পণ্য বিতরণ বা এর প্রচার নিষিদ্ধ। এরপরও তামাক কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যের প্রকাশ্য প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে।
তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত স্থানীয় সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডির পরিদর্শন টিমের প্রদত্ত তথ্য অনুসারে, নগরীর কোর্ট চত্বর, লক্ষ্মীপুর মোড়, সিএন্ডবি মোড়, বর্নালী মোড়, প্রেসক্লাবের সামনে, জিরোপয়েন্ট, বোয়ালিয়া থানার মোড়, তালাইমারী গোল চত্বর, কাজলা, বিনোদপুর বাজার, আমচত্বর ছাড়াও আচ্ছাদিত মার্কেট নিউমার্কেট ও আরডিএ মার্কেটের অভ্যন্তরে এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
এসিডি’র অ্যাডভোকেসি অফিসার শরিফুল ইসলাম শামীম বাংলানিউজকে বলেন, মাত্র কয়েকদিন আগে ঢাকা টোব্যাকো কোম্পানি নামের একটি দেশি তামাক কোম্পানি ঈদ শুভেচ্ছার নামে তামাক পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য শহরের অধিকাংশ জায়গায় পোস্টার বিতরণ করে। শুধু তাই নয়, তামাক কোম্পানিগুলো খালি মোড়ক জমা দিয়ে বিনামূল্যে তামাক পণ্য, বালতি, জগ, ডিনারসেট, মোবাইল ফোন, টিভিসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী প্রদান করে তামাক বিক্রেতাদের আইন লঙ্ঘনে উৎসাহিত করছে।
তামাক পণ্যের বিক্রয় কেন্দ্রে মাঝে মাঝে মোবাইল কোর্ট হলেও কোম্পানি ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। বরং তামাক বিক্রেতা মোবাইল কোর্টে জরিমানা দিলে জরিমানার টাকা কোম্পানি পরিশোধ করে দেয়। আবার জরিমানার অর্থ এতোই কম যে কোম্পানির তেমন কোনো ক্ষতি হয় না বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসিডির প্রকল্প সমন্বয়কারী এহসানুল আমিন ইমন বলেন, কোম্পানিগুলো সরাসরি আইন লঙ্ঘন করছে। মোবাইল কোর্টের অপর্যাপ্ততা ও আইন প্রয়োগে অনীহার কারণে কোম্পানি আইন লঙ্ঘনে আরও বেশি উৎসাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, তামাক কোম্পানি আইনের ৫ ধারা লঙ্ঘন করে বিজ্ঞাপন অব্যাহত রাখলেও এই আইনে কোম্পানির বিরুদ্ধে একটি মামলাও দাখিল হবার তথ্য পাওয়া যায় নি। এই আইনে ১ লাখ টাকা ও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে অথচ তার কোন প্রয়োগ নেই এবং নজিরও নেই বলে উল্লেখ করেন এসিডির প্রকল্প সমন্বয়কারী।
প্রসঙ্গত, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে সকল পয়েন্ট অব সেল অর্থাৎ তামাকের বিক্রয় কেন্দ্রে সিগারেটের খালি মোড়ক দিয়ে সাজানো বিজ্ঞাপন প্রদর্শন আইনত: দণ্ডণীয় অপরাধ হলেও আইনের ধারাবাহিক প্রয়োগের অভাবে আইনটি লঙ্ঘিত হচ্ছে।
মাঝে মধ্যে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হলেও কিছু দিন পর তামাক কোম্পানিগুলো পুনরায় শহরের জনবহুল এলাকায় তামাক পণ্য বিক্রয় স্থলে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৭
এসএস/জেডএম