ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ট্রাকের পণ্য গরিবের জন্য

শরিফুল ইসলাম জুয়েল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৭
ট্রাকের পণ্য গরিবের জন্য ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র থেকে পণ্য সংগ্রহ করছেন ক্রেতারা; ছবি-কাশেম হারুন

ঢাকা: আমরা ছুডোলোক (গরিব) মানুষ, বড় বড় দোহানে যাইতে আমরার ডর লাগে (ভয় লাগে)। দোহানের ভিতরে গেলেও আমগোরে দেইখা ক্যামনে যানি চাইয়া থাহে। ছুডো-মুডো একটা জিনিস নিলেও তারা দিতে চায় না। ট্যাহা বেশি রাখতে চায়। আমগোর সাধ্য মতো রাস্তা দিয়া হাইটা হাইটা ট্যারাক (ট্রাক) থেইকা হস্তা (সস্তা) দামে  আডা (আটা), ডাইল (ডাল), চিনি, চাইল (চাল) কিনা লই। ট্যারাকের মাল গরিবের মাল । হেইর লইগ্গা পেট বাঁচাইতে গোরিবের দোহান থেইকাই মালামাল লই।

মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর রামপুরা বাজারের খোলা ট্রাকে পণ্য কিনতে এসে বাংলানিউজকে কথাগুলো বলছিলেন আছিরন বিবি।

ময়মনসিংহ জেলা থেকে ঢাকায় জীবিকার তাগিদে আসেন স্বামীহারা আছিরন বিবি (৫৫)।

চার মেয়েকে বিয়ে দিয়ে এখন ঢাকায় মানুষের বাসায় কাজ করে তার সংসার চলে। শহরের বড় দোকানে পণ্য কিনতে গেলে অল্প পরিমাণে পণ্য দিতে চায় না দোকানিরা। এজন্য খোলা ট্রাক থেকেই পণ্য কিনছেন তিনি।

তবে আছিরন বিবির অভিযোগ মাঝে মাঝে এসে জিনিসপত্র পাওয়া যায় না। এসব বিক্রয় প্রতিনিধিরা দোকানিদের কাছে পাইকারি বিক্রি করে দেয়। দোকানিরা কম দামে এখান থেকে পণ্য কিনে বেশি দামে বিক্রয় করে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র থেকে নিত্যপণ্য সংগ্রহ করছেন ক্রেতারা; ছবি- কাশেম হারুনতবে বিক্রয় প্রতিনিধি সামাদ মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, আমি একসাথে ৫ কেজির বেশি কোনো পণ্যই বিক্রি করি না। আর ব্যবসায়ীদের দেখলে আমরা বুঝতে পারি তাদের কাছে বিক্রি করি না। সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করেই তার পণ্য থাকে না বলেও জানান সামাদ মোল্লা।

এদিকে বিভিন্ন সময়ে খোলা ট্রাকের এ সকল পণ্যের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও বর্তমানে ভাল মানের পণ্য পাওয়া যায় বলেও জানান ক্রেতারা।

স্থানীয় বাসিন্দা কামরুন নাহার এদিন দুধ এবং ডাল কিনতে আসেন রামপুরা বাজারের এই ট্রাকে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আগে এখান থেকে একদিন ডাল কিনেছিলাম। তখন সেটা ভাল হয়নি। কিন্তু এখন নিয়মিত দুধ এবং ডাল কিনি। মান খুবই ভালো। আর দোকানের থেকে কম দামে ভালো জিনিস পাই। আমাদের মতো গরিবের জন্য এটা খুবই ভালো সার্ভিস।

রামপুরা বাজারের এই ট্রাকে দেখা গেছে প্রতি কেজি চিনি (দেশি) ৫৫ টাকা, মসুর ডাল (অস্ট্রেলিয়ান মাঝারি মানের) ৮০ টাকা, মসুর ডাল (মোটা) ৬০ টাকা, সয়াবিন তেল (পুষ্টি ব্র্যান্ডের) ৫ লিটার ৪৫০ টাকা, লবণ প্রতি কেজি ৩৫ টাকা, দুধ (খোলা) প্রতি কেজি ৩৬০ টাকা, দুধ প্যাকেট (পিওর ব্রান্ড) ৫শ’ গ্রাম ২শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৭
এসআইজে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।