এসব উপজেলায় কমপক্ষে একটি করে তিনতলা বিশিষ্ট ৫২০টি বাজার তৈরি করা হবে। যার আয়তন হবে চার হাজার থেকে ১০ হাজার বর্গফুট পর্যন্ত।
গ্রাম পর্যায়ে ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টি, গ্রামীণ বাজার উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষি ও অকৃষি পণ্যের বাজারজাত সুবিধায় এগুলো নির্মিত হবে। প্রতিটা বাজারে নারীদের জন্য থাকছে আলাদা ফ্লোর, যেখানে নারীরা উৎপাদিত পণ্য কেনা-বেচা করতে পারবেন।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, গ্রামীণ বাজারে নারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা থাকবে। নারীরা নিজেরা প্রয়োজনীয় পণ্য কেনাকাটা ছাড়াও উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। নারীরা আর ঘরে বন্দী থাকবে না, বাইরে বের হবে। বাজারে এক নারী অন্য নারীরর সঙ্গে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডও শেয়ার করতে পারবেন এই বাজারে।
তিনি আরও বলেন, দেশের গ্রামীণ অবকাঠমোর উন্নয়ন হলেও তা সার্বিকভাবে সন্তোষজনক নয়। এরফলে গ্রামীণ হাট-বাজারের পূর্ণ সুবিধা পাচ্ছেন না কৃষক ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। ফলে মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে স্বল্প দামে কৃষকদের পণ্য বিক্রি করতে হয়। গ্রাম পর্যায়ে ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্যই এই গ্রামীণ বাজার। এগুলোর বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত।
একনেক সভায় এটিসহ মোট ৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৫ হাজার ২২১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক ঋণ দেবে ৫২৯ কোটি টাকা।
সাত বিভাগের ১৮৩টি উপজেলায় চলমান ‘মাধ্যমিক শিক্ষা উপবৃত্তি’ প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ছে। বর্ধিত মেয়াদে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে এসএসসি বা দাখিল পর্যন্ত মাধ্যমিক পর্যায়ের ৭৩ লাখ ৫৪ হাজার শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দেওয়া অব্যাহত থাকবে। এজন্য প্রকল্পটির ব্যয়ও বাড়ছে ৫৩৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। ৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা উপবৃত্তি প্রকল্পটি ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন মেয়াদে শেষ হয়েছে। এখন মেয়াদ বেড়ে ২০১৯ সালের জুন ও ব্যয় বেড়ে ১ হাজার ৩৩০ কোটি টাকা দাঁড়াচ্ছে। যা মূল প্রকল্পের চেয়ে ৫৩৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বা ৬৮ দশমিক ০৮ শতাংশ বেশি।
এছাড়াও রাজধানীর উত্তরায় নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য নির্মিত হবে ১৫ হাজার ৩৬টি ফ্ল্যাট। ‘ঢাকার উত্তরা ১৮নং সেক্টরে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের জনসাধারণের জন্য এপার্টমেন্ট নির্মাণ’ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়।
২১৪ দশমিক ৪৪ একর জমিতে চলতি সময় থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। সব ধরনের আবাসিক সুবিধা সম্বলিত ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৯০২ কোটি টাকা।
প্রতিটি ফ্ল্যাটের গড় আয়তন ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ২৫০ বর্গফুট। প্রতি বর্গফুটের গড় মূল্য পড়বে ৪ হাজার ৫শ’ থেকে ৪ হাজার ৮শ’ টাকা। আট কিস্তিতে গ্রাহককে আট বছরে দাম পরিশোধ করতে হবে। ফ্ল্যাটগুলো কিনতে সবাই আবেদন করতে পারবেন। পরে যাচাই-বাছাই করেই বরাদ্দ দেবে সরকার।
২১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘জামালপুর-কালিবাড়ী-সরিষাবাড়ী সড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতীকরণ’ প্রকল্পও অনুমোদন দেয়া হয়। ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১৯১ কোটি টাকা। ‘বাকেরগঞ্জ-বরগুনা ১৩২ কেভি সঞ্চালন লাইন এবং বরগুনা ১৩২/৩৩ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণে ১৪৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
অন্যদিকে ৫৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক যোগাযোগ প্রকল্পও অনুমোদন পেয়েছে একনেক সভায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৭
এমআইএস/এসএইচ