বাংলাদেশ সরকার শিগগিরই প্রবাসীদের জন্য বিমা বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রবাসীদের জীবন ও অর্থনীতির সুরক্ষায় গ্রিন ডেল্টা সবচেয়ে বেশি এগিয়ে এসেছে।
গ্রিন ডেল্টার হেড অব প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট, অপারেশন ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুভাশিষ বড়ুয়া বাংলানিউজকে জানান, তারাই বাংলাদেশের প্রথম কোনো ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি যারা প্রবাসী বিমা স্কিম চালু করেছেন।
তিনি জানান, প্রবাসীদের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর কাভারেজসহ বাড়তি কিছু সুবিধা দিচ্ছে গ্রিন ডেল্টা। দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত কারণে বিমা দাবির পুরো সাড়ে সাত লাখ টাকা দেবে এ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। প্রবাসে মারা গেলে মরদেহ দেশে নিয়ে আসার জন্য পুরো খরচ বহন করবে গ্রিন ডেল্টা। প্রবাসে কোনো ডকুমেন্ট বা পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে তা পুনরায় করার টাকা দিচ্ছে দেশীয় এ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিটি। ‘প্রবাসে কাজ করতে গিয়ে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হানি বা বিকল্প অঙ্গ প্রতিস্থাপনেরও ব্যয় বহন করবে গ্রিন ডেল্টা। এছাড়া হুইলচেয়ার বা কৃত্রিম হাত-পা সংযোজনের খরচ বহন করবে। আবার যদি স্থায়ীভাবে হাত-পা কাটা পড়ে সে ক্ষেত্রে বিমা দাবির পুরো টাকাই পাবেন প্রবাসীরা। ’
সুভাশিষ বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশ সরকার প্রবাসী বিমা বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিগগিরই চালু হতে পারে। এতে মৃত্যুদাবির পাশাপাশি যৌক্তিক কারণে প্রবাসীরা চাকরিচ্যুত হলে পরবর্তী চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অর্থসহায়তা পাবেন।
মালয়েশিয়া থেকে যে পরিমাণ রেমিটেন্স আসে সেই রেমিটেন্সের সঙ্গে এই প্রবাসী স্কিম যুক্ত করা গেলে সবচেয়ে ভলো হবে- মন্তব্য করেন গ্রিন ডেল্টার এই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম রেমিটেন্সের সঙ্গে বিমা পলিসি যুক্ত করতে। যাতে সবাই এতে যুক্ত হয়। এতে আমাদের মেধাবী ও দক্ষ পরিশ্রমী প্রবাসী শ্রমিকরা উপকৃত হবে। দেশের ৫০ লাখ শ্রমিক বিদেশে কাজ করছেন। তাদের ইন্স্যুরেন্স দেশেই করা গেলে দেশের টাকা দেশেই থাকবে।
তিনি জানান, গ্রিন ডেল্টা মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য প্রবাসী ইন্স্যুরেন্স চালু করে ২০১২ সালে। মালয়েশিয়ান একটি ইন্স্যুরেন্স সহযোগী নিয়ে যৌথভাবে প্রথম দিকে ২ হাজার লোককে পলিসি দেন তারা। সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার লোক পলিসি গ্রহণ করেন।
মালয়েশিয়ায় কেন গ্রিন ডেল্টা প্রবাসী বিমা চালু করলো- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আশির দশক থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত প্রায় চার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় মারা গেছেন। এর মধ্যে শুধু ইন্স্যুরেন্স পেয়েছেন গুটিয়েকজন। এতো লোক মারা গেলেও এই বিমা সুবিধা তারা কোনোদিন হাতে পায়নি। মালয়েশিয়ান সরকারের নিয়মই ছিল প্রবাসীদের ইন্স্যুরেন্স থাকার বিষয়টি।
সে হিসেবে দেখা গেছে তিন মিলিয়ন রিঙ্গিতের (৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা) মতো বিমা দাবির টাকা মালয়েশিয়ায় পড়ে আছে। সেগুলো কেউ ক্লেইম করেনি। এর আলোকে মালেশিয়ায় এম এএ তাকাফুল-এর সঙ্গে যৌথভাবে আমরা বিমা স্কিম নিয়ে কাজ শুরু করি।
গ্রিন ডেল্টার মাধ্যমে প্রবাসে যাওয়ার আগেই বিমা সুবিধা করে যেতে পারবে। সরকার এটা সমন্বিতভাবে করার উদ্যোগ নিলে সব ইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানও এটা চালু করতে পারে। বাংলাদেশ থেকে যখনই প্রবাসী যাবে তখন তার হাতে বিমা কাগজ থাকবে। এয়ারপোর্টে একটি বুথের মাধ্যমে এ সেবা দেওয়া সম্ভব বলেও মনে করেন সুভাশিষ।
যেভাবে বিমা করবেন প্রবাসীরা
অনলাইনে ফরম পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ দিলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রবাসীদের বিমা পলিসি দেবে গ্রিন ডেল্টা। এক্ষেত্রে পাসপোর্টের কপি, ওয়ার্কপামিটের কপি, বিদেশি কাজের পরিচয়পত্র বা আইসি, যে রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে গেছেন তার কাগজপত্র, মালয়েশিয়ায় যে ঠিকানায় বসবাস করেন ও যেখানে কাজ করেন তার ঠিকানা দিতে হবে। এসব তথ্য দিলেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিমা করে দেওয়া সম্ভব। হট লাইন +880 9613444888, +880 9851170 ,
+880 9851902
বাংলাদেশ সময়: ০৯১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৭
এসএ/এসআই/এএ