সোমবার (০৪ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় যশোর সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (সচিব) পবন চৌধুরী এসব কথা জানান।
পবন চৌধুরী বলেন, যশোরের বেনাপোলে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর, বিমানবন্দর, শেখ হাসিনা সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক, মোংলা ও নওয়াপাড়া নৌবন্দর, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থাকায় ভৌগলিকভাবে সুবিধাজনক এলাকা হওয়ায় এখানে দু’টি ইকোনোমিক জোন প্রতিষ্ঠিত হলে যশোর বাণিজ্যের তৃতীয় রাজধানী হওয়ার যথেষ্ট সম্ভবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, দু'একদিনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রস্তাব পাঠাবো এবং চলতি মাসেই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী কমিটির সভা হবে, ওই সভায় অনুমোদন হলে দ্রুত গতিতে জমি অধিগ্রহণসহ সব কাজ দৃশ্যমান হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পবন চৌধুরী বলেন, সদর উপজেলার মালঞ্চিতে ৪০০ থেকে ৫০০ একর একর জমি নিয়ে গঠিত ইকোনমিক জোনে অটো-মোবাইলস, ইলেকট্রনিক্স, টেক্সটাইল, গার্মেন্টস, ফার্মাসিউটিক্যালসহ মাল্টিপ্রোডাক্ট (বিভিন্ন পণ্য) উৎপাদনের কাজ হতে পারে, এছাড়াও ঝিকরগাছা-শার্শায় ৪০০ একর জমির উপর স্থাপিত হতে যাওয়া ইকোনমিক জোনে মাল্টিপ্রোডাক্ট কিংবা দেশি-বিদেশি কোম্পানির চাহিদার সঙ্গে বিবেচনা করে ফার্মাসিউটিক্যাল কিংবা অন্য কোনো পণ্য উৎপাদনের সিদ্ধান্ত হতেও পারে, সেটা চাহিদার উপর নির্ভর করেই হবে।
এমনকি, প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ওইসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, বৈদ্যুতিক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন আসবে।
যশোরের জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা (উপসচিব) মলয় চৌধুরী, যশোর স্থানীয় সরকার উপ পরিচালক মাজেদুল ইসলাম খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), শার্শা ও ঝিকরগাছার ইউএনও-এসিল্যান্ডসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উভয় প্রকল্প এলাকায় স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন ২০১৭ অনুযায়ী উভয় প্রকল্প এলাকার জমির সম্ভাব্য মূল্যের উপর অতিরিক্ত শতকরা ২০০ ভাগ এবং স্থাপনা, ফসল ও বৃক্ষের মূল্যের উপর আরও অতিরিক্ত ১০০ ভাগ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এছাড়াও ঘর-বাড়ি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে সব ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি নির্মাণ, চাকরির উপযোগী করতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, চাকরির ক্ষেত্র অগ্রাধিকার দিয়ে তাদের পাশে থাকবে সরকার।
প্রাথমিক জরিপের তথ্যানুযায়ী, শার্শার শ্যামলাগাছী এলাকার প্রতি একর ধানের জমির সম্ভাব্য বাজারমূল্য ২১ লাখ ৫৯ হাজার এবং প্রতি একর ডাঙ্গা জমির আনুমানিক বাজার মূল্য ৬৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। সে হিসাবে এ মৌজার ২০৪ দশমিক ১১ একর জমির আনুমানিক বাজারমূল্য ৪৪ কোটি ৩৬ লাখ ৬৭ হাজার।
এছাড়াও ঝিকরগাছার শরীফপুর, কালিয়ানী, আমিনী, রামচন্দ্রপুর, মানিকালী, কলাগাছি মৌজায় একরপ্রতি ধানী জমির আনুমানিক দাম ৫ লাখ থেকে ১৮ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে মোতাবেক এসব মৌজার ৩২৫ দশমিক ৭৯৯ একর জমির আনুমানিক বাজারদর ২৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৭
ইউজি/এসএইচ