ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

গ্রামীণফোনের ৭ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৮
গ্রামীণফোনের ৭ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি গ্রামীণফোন

ঢাকা: স্থান ও স্থাপনার ভাড়ার ভ্যাট পরিশোধ না করে গ্রামীণফোন সরকারের ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। আর এই ফাঁকি দেওয়া ভ্যাট পরিশোধে প্রতিষ্ঠানটিকে চূড়ান্ত দাবিনামা পাঠিয়েছে বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)।

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) চূড়ান্ত দাবিনামা পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণফোন কোম্পানি ২০১৭ ‍সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে স্থান ও স্থাপনা ভাড়া বাবদ সরকারের ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, স্থান ও স্থাপনা ভাড়া গ্রহণকারীর ওপর ৯ শতাংশ হারে মূসক (ভ্যাট) প্রযোজ্য। তবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত অনধিক ১৫০ বর্গফুট আয়তনের কোনো স্থাপনা এর অন্তর্ভুক্ত নয়।

এর বাইরে ব্যবহৃত আয়তনের স্থাপনার ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রযোজ্য। আর সেই ভ্যাট মালিকপক্ষকে ভাড়া দেওয়ার সময় কেটে রেখে দেবে কোম্পানি। কিন্তু গ্রামীণফোন মালিককে ভাড়া দিলেও ভ্যাটের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি। ফলে ফাঁকি দেওয়া অর্থ গ্রামীণফোনকেই পরিশোধ করতে হবে।  

 

শুধু তাই নয়, মূসক আইন, ১৯৯১ এর ৩৭ ধারার উপধারা (৩) অনুযায়ী অপরিশোধিত মূসকে সুদের হার ২ শতাংশ।  প্রাথমিক দাবিনামা জারির পর থেকে এই সুদ প্রযোজ্য।

 

এদিকে গ্রামীণফোন ‍একের পর এক ভ্যাট ফাঁকি দিয়েই চলেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কঠোর অবস্থানে থাকার পরও থামছে না গ্রামীণফোনের ভ্যাট ফাঁকি। অন্যদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও (এনবিআর) একাধারে প্রতিষ্ঠানটির ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করে চলেছে।

এর আগে ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সময়ে সিম পরিবর্তনের নামে সরকারের ১ হাজার ২৩ কোটি ২৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা, ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে সিম পরিবর্তনের নামে আরও  ৩৭৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দেয়।  ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত স্থান ও স্থাপনা ভাড়াবাবদ মূসক (ভ্যাট) ফাঁকি দিয়েছে ১৯ কোটি ৬ লাখ টাকা। এছাড়া স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার আরও ৪ কোটি ৮০ লাখ এবং ১২ কোটি ৫৬ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। আর সিম ট্যাক্সের উপরে ৪৫২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, বিধি বর্হিভূত রেয়াত বাবদ ২৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটারনাল কমিউনিকেশন্স সৈয়দ তালাত কামাল বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমার কিছুই জানা নেই। আপনার কিছু জানার থাকলে আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানাতে পারবো।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) কমিশনার মো. মতিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গ্রামীণফোনের কাছে ফাঁকি দেওয়া অনেক রাজস্ব পড়ে আছে। সব প্রতিষ্ঠান স্থান ও স্থাপনার ওপর ভ্যাট দিলেও গ্রামীণফোন সেটা দিতে চায় না।  প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন হলেই আদালতের শরণাপন্ন হয়। দিন শেষে আদালতে তাদের অনেক ভ্যাট ফাঁকি প্রমাণিতও হয়েছে। ফলে দেখা যায়, ফাঁকি দেওয়া অর্থ সঠিক সময়ে পরিশোধ না করায় সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গ্রামীণফোন স্থান ও স্থাপনা ভাড়াবাবদ ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা ফাঁকি দিয়েছে। অনুসন্ধানে ফাঁকির তথ্য উদঘাটন হওয়ায় চূড়ান্ত দাবিনামা জারি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিকে অনতিবিলম্বে ফাঁকি দেওয়া অর্থ পরিশোধের জন্য বলা হয়েছে। নতুবা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৮
এসজে/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।