ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

লাগামহীন চালের দাম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮
লাগামহীন চালের দাম দিনাজপুরের একটি চালের আড়তের ছবি

দিনাজপুর: দেশের শস্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরে লাগামহীন বেড়েই চলেছে চালের দাম। পাঁচ দিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে বিভিন্ন চালে বস্তা প্রতি (৫০ কেজির) পঞ্চাশ টাকা থেকে আড়াইশ’ টাকা পর্যন্ত ও খুচরা বাজারে ২ থেকে ৬ টাকা বেড়েছে প্রতি কেজি চালে।

ধানের বাজার চড়া ও সংকটের কারণে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী বলে জানিয়েছেন মিল মালিকরা। অন্যদিকে চালের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন ধান সংকট থাকলেও মিলারদের কাছে যথেষ্ঠ পরিমাণে চাল মজুদ রয়েছে।

দিনাজপুর শহরে চালের খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে জানা যায়, গত বছর বন্যার পর থেকে লাগামহীন বেড়ে চলেছে চালের দাম। মাস দেড়েক আগেই কৃষকরা ফসলি জমি থেকে আমন ধান তুলেছেন। ধান ওঠার দেড় মাসের মধ্যে দিনাজপুর জেলায় দেখা দিয়েছে ধান সংকট। এ অজুহাত দেখিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী চালের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন। চালের দাম বাড়তে থাকায় নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষরা পড়েছেন চরম বিপাকে। আর খুচরা ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ করতে হচ্ছে অতিরিক্ত পুঁজি।  

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) জেলা শহরের বৃহত্তম পাইকারি বাজার বাহাদুর বাজারে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) মিনিকেট চাল গত পাঁচদিন আগে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৬৫০ টাকা দরে। বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে ২ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২৮ চালের বস্তা ছিলো ২ হাজার ৬০০ টাকা, যা বেড়ে বর্তমানে ২ হাজার ৬৫০ টাকা, গুটি স্বর্ণা ছিলো ১ হাজার ৭০০ টাকা বস্তা, যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮০০ টাকা, সুমন স্বর্ণা বস্তা প্রতি ছিলো ২ হাজার টাকা, যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১০০ টাকা। এছাড়া সব ধরনের চালের দাম পাইকারি বাজারে বৃদ্ধি পেয়েছে।  

অপরদিকে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল পাঁচদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা দরে, যা বেড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫৭ থেকে ৫৮ টাকায়, ২৮ চাল ৪৮-৫০ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫৩ থেকে ৫৪ টাকায়, ৩৮-৪০ টাকার গুটি স্বর্ণা বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৪৪-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ৩৮-৪০ টাকায় সুমন স্বর্ণা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৩ টাকায়।  

জেলাজুড়ে হঠাৎ করে চিকন চালের পাশাপাশি মোটা চালের দামও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় নাভিশ্বাস উঠেছে নিম্মআয়ের মানুষের। বাহাদুর বাজারে চাল কিনতে আসা শহরের পশ্চিম বালুয়াডাঙ্গা হঠাৎপাড়া এলাকার দিনমজুর সেকেন্দার আলী বাংলানিউজকে জানান, সপ্তাহ খানেক আগেও চাল কিনেছি প্রতি কেজি ৩৮-৪০ টাকায়। কিন্তু সেই চালই আজ ৪৫ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে। দ্রুত চালের দাম বাড়ায় আমরা মহাবিপাকে পড়েছি।  

বাহাদুর বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা মো. এরশাদ হোসেন বলেন, গত পাঁচদিনের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম বস্তায় ৫০ টাকা থেকে আড়াইশ’ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে চাল মজুদ করে খুচরা ব্যবসায়ীদের উপর চাপ প্রয়োগ করে ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে চাল ছাড়ছেন। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যে দরে ক্রয় করছি তা সামান্য লাভে বিক্রি করছি। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এ খুচরা ব্যবসায়ী।

দিনাজপুর শহরের পুলহাট শিল্প নগরী এলাকার মেসার্স শুভ অ্যান্ড স্নিগ্ধ অটোরাইস মিলের স্বত্বাধিকারী মো. সাইদুর জামান সবুজ বাংলানিউজকে জানান, আমরা মিলে ধান থেকেই চাল উৎপাদন করি। আর গত কয়েক সপ্তাহ থেকে ধানের সংকট দেখা দিতে শুরু করে যা বর্তমানে তীব্র আকার ধারণ করেছে। ধানের সংকট তাই এর প্রভাব চালের বাজারেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮
জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।