মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলনকক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থনীতিবিদরা এ প্রস্তাব দেন।
এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এ সময় এনবিআরের চার সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এই অর্থনীতিবিদরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ, পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট অব বালাদেশের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জায়েদী সাত্তার, নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপারসের (পিডব্লিউসি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মামুনুর রশীদ প্রমুখ।
আলোচনাসভায় ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সামনে নিবার্চন। তাই বাজেটে বড় পরিবর্তন আশা করছি না। তবে বাজেটে সংস্কার হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, অর্থবছরে করপোরেট করহার ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে। আগামীতেও এটি ২ শতাংশ কমিয়ে আনা উচিত। এভাবে পর্যায়ক্রমে কমিয়ে ৫ বছরের মধ্যে করপোরেট কর ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। এছাড়াও বিভিন্নখাতে কর আদায়ে বৈষম্য রয়েছে। মোবাইল কোম্পানির ক্ষেত্রে করের হার ৪৫ শতাংশ। এতে এখাতে বিনিয়োগ বাড়ছে।
জায়েদী সাত্তার বলেন, ব্যক্তিখাত থেকে কর আদায় বাড়িয়ে মোট করের ১০ থেকে ১২ শতাংশে নিয়ে যেতে হবে। সিগারেটের পাশাপাশি বিড়ির দাম বাড়ানো দরকার।
অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল রাখতে হলে মনিটরিং পলিসি’র সাপোর্ট দরকার। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবং অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করের ব্যবধান আরো ৫ শতাংশ করা, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কমিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বৃদ্ধি দরকার। পাশাপাশি বহুজাতিক কোম্পানির টেকনিক্যাল এবং রয়েলেটি নামে প্রতিবছর যে টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে সেটা রোধ করা দরকার বলে প্রস্তাব দেন তিনি।
মামুন রশিদ বলেন, প্রতিবছর আমাদের ভোগ ব্যয় বাড়ছে। এর মানে হল দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হচ্ছে। এতে বিদেশিরা বিনিয়োগে উৎসাহিত হবে। এক্ষেত্রে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, দেশে করপোরেট কর বেশি। তাই এই কর কমানোর ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনিও এ বিষয়ে কিছু চিন্তাভাবনা করছেন। তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর আরও কীভাবে কমানো যায়, সে বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। বিষয়টি এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে পুঁজিবাজারে প্রণোদনা দিতে কর কমানোর চিন্তাভাবনা চলছে। নতুন কোম্পানির শেয়ার অফলোড এবং কর অব্যাহতি সুবিধা কিভাবে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পেতে পারেন, তাও নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, তামাক পণ্য নিরুৎসাহিত করছে সরকার। এক্ষেত্রে পণ্য সহজলভ্য করলে মানুষ ধূমপান বন্ধ করবে না। তাই কর বাড়িয়ে পণ্যের দাম বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৮
এমএফআই/এসএইচ