ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ভারতীয় গরু মুক্ত হাটে ‘ওরাও’ দেশি

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৮
ভারতীয় গরু মুক্ত হাটে ‘ওরাও’ দেশি ভারতীয় গরু হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছে ব্যাপারীরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: পবিত্র ঈদুল আজহার আর বাকি মাত্র তিনদিন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরু আসতে শুরু করেছে নগরীর একমাত্র স্থায়ী পশুর হাট গাবতলীতে। হাট ঘুরে দেখা গেছে দেশি গরুর রাজত্ব। ‘ভারত থেকে গরু এসেছে’ এমন চিত্র হাট ঘুরে দেখা যায়নি। ভারতীয় সীমান্তে গরু আটকা পড়ছে, কোরবানির আগে ভারত থেকে হাটে গরু উঠবে এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিয়েছেন ব্যাপারীরা।

ভারত থেকে গরু আসছে! গত কোরবানির ঈদের দু’দিন আগে এমন গুজব উঠেছিলো। তবে সেই গুজব এবার নাই।

বাস্তবে এবার ভারত থেকে আসা কোনো গরু কোরবানির হাটে উঠেনি। গাবতলী পশুরহাটে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর ও রাজশাহীর ব্যাপারীদের রাজত্ব বেশি। তবে অধিকাংশ হাট কুষ্টিয়ার ব্যাপারীদের দখলে। শুধু ব্যাপারী নয়, খামারিও এসব অঞ্চলের। অনেকে আবার নিজের বাড়িতে পোষা একটা বা দুইটা গরু হাটে তুলেছেন বাড়তি দামের আশায়।
 
হাজারও দেশি গরুর ভিড়ে হাতে গোনা কিছু লম্বাকায় সাদা গরু দেখা গেছে। হাটে অনেকের কাছে সাদা বোল অথবা ধবল বোল্ডার নামে পরিচিত।

গরু বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে এসেছেন ব্যাপারীরা।  ছবি: বাংলানিউজ
ব্যাপারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এগুলো ভারতীয় গরু। তবে এক বছর অথবা ছয় মাস আগে এসব গরু ভারত থেকে এসেছে। এরপরে খামারি ও ব্যাপারীরা নিজের হাতে পেলে পুষে এসব গরু হাটে তুলেছেন। সাদা বোল্ডারের দামও চড়া। ১৫ থেকে ১৬ মণ মাংস পাওয়া যাবে এমন সাদা বোল্ডারের দাম হাঁকা হচ্ছে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা।

কুষ্টিয়া কুমারখালির খামারি আব্দুল গণি। ১২টা সাদা বোল্ডার হাটে তুলেছেন তিনি। সাদা বোল্ডারের শরীর আরও সাদা করতে পাউডার ব্যবহার করছেন তিনি।

সাদা বোল্ডার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওরা (সাদা বোল্ডার) একন দ্যাশাল। আমিইতো (নিজে) ৮ মাস নিজের হাতে পুষলাম। যকন (যখন) ইন্ডিয়াথি (ভারত থেকে) কিনছি তকন বোলের দেহুতে হাঁড় কয়খান ছাড়া কিচ্চু ছিল না। ’

সাদা বোল্ডার অনেকে ক্রেতার পছন্দ। কিন্তু বর্তমানে এসব গরু কিনতে তিন থেকে চার লাখ টাকা গুণতে হবে ক্রেতাদের।
 
লালবাগ আব্দুল আজিজ ল্যান্ড থেকে এসেছেন সারওয়ার হোসেন। ভারতীয় সাদা বোল্ডার কিনতে গাবতলীতে এসেছেন তিনি। গরু বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে এসেছেন ব্যাপারীরা।  ছবি: বাংলানিউজ
সাদা বোল্ডারের দাম প্রসঙ্গে ক্রেতা সারওয়ার হোসেন বলেন, সাদা বোল্ডারের দাম জিজ্ঞেস করেছি। প্রথম ৭ লাখ টাকা দাম চেয়েছি। পরে বিক্রেতা বলেছে ৫ লাখ টাকা ছাড়া গরু দেবে না। আমি তিন লাখ টাকা পর্যন্ত দাম চেয়েছি। গরুর দাম ডাবল বলা চলে। ঈদের এখনও তিনদিন বাকি আছে সেই জন্য তারা (বিক্রেতা) হয়তো গরু ছাড়ছে না। গরুও হয়তো পর্যাপ্ত পরিমাণে আসেনি এখনও। এই জন্যই দামটা তাদের হাতে রাখছে। হয়তো আরও দুই একদিন গেলে আরও কিছু কমতে পারে। ’

হাতে গোনা কিছু সাদা বোল্ডার বাদ দিলে গাবতলী পশুর হাট দেশি গরুময়। ছোট ও মাঝারি গরুর দামও হাঁকা হচ্ছে বেশি। দেশি ছোট গরু মাংস হয়তো তিন মণ হবে। এমন গরুর দামও এক লাখ টাকা হাঁকা হচ্ছে। অনেক ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে দাম।
 
মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে গরু কিনতে গাবতলী হাটে এসেছেন আমিনুল হক। এর আগে কয়েকটি হাট ঘুরে গাবতলীতে এসেছেন তিনি।
 
আমিনুল বলেন, এবার গরুর দাম বাড়তি, নাগালের বাইরে। হাটে ভারতের গরু নাই। ভারত থেকে গরু আসেনি বলেই ব্যাপারীরা অস্বাভাবিক দাম চাচ্ছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৮
এমআইএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।