ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাংলাদেশ থেকে ভারতের রেমিটেন্স আয় নিয়ে অপপ্রচার

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
বাংলাদেশ থেকে ভারতের রেমিটেন্স আয় নিয়ে অপপ্রচার ডলার/ফাইল ফটো

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত অর্থবছরে (২০১৭-১৮) বিশ্বে সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা আয়কারী রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ভারত। এই রেমিটেন্সের সবচেয়ে বড় অংশটি আসে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। এই তালিকার পরবর্তী রাষ্ট্রগুলো যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, যুক্তরাজ্য, ওমান, নেপাল, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া।

কিন্তু গত জুলাই মাসে একটি সংবাদ মাধ্যম দাবি করে বসে, ‘বাংলাদেশ হচ্ছে ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম রেমিটেন্স উৎস!’ শুধু তাই না, সেখানে বিভিন্ন লিংক ও ছবি দেখিয়ে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স গেছে ভারত, এমন বানোয়াট তথ্য পরিবেশন করা হয়।  

এই সংবাদটি যাচাই-বাছাই না করেই বিশ্বাস করেছেন অনেক ব্যক্তি।

অনেকে তা শেয়ার করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং হয়ে পড়ে ভাইরাল। প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল মাইগ্রেশন অর্গানাইজেশন ও ভারতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ ব্যাংকের বরাত দিয়ে বেশ কিছু তথ্য উপস্থাপন করায় বিভ্রান্ত হতে হয় অনেক সচেতন ব্যক্তিকেও।

অপপ্রচারমূলক ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রেমিটেন্স যায় ৮৩২ কোটি ডলার। ২০১৪ সালে এর পরিমাণ ছিল ৪৫০ কোটি ডলার। অথচ ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক, বিশ্বব্যাংক বা আইএমও কোথাও এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে মিটেন্স ও মাইগ্রেট ইস্যুতে নির্ভরযোগ্য তথ্য দানকারী প্রতিষ্ঠান 'পিউ রিসার্চ সেন্টারের' ওয়েবসাইটে দেখা যায়, ভারত থেকে যেসব দেশে প্রবাসী রেমিটেন্স (আউটগোয়িং) গেছে সেই তালিকায় বাংলাদেশ শীর্ষে। ২০১৬ সালে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে ভারত থেকে। আর অন্য দেশ থেকে ভারতের অর্জিত রেমিটেন্সের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান দেখা যায় ২৫ নম্বরে।  

যেখানে কথিত ভুয়া রিপোর্টে বলা হয়েছিল বাংলাদেশ থেকে ভারত অর্জন করে ১ হাজার কোটি ডলার, সেখানে পিউ রিসার্চ সেন্টারের ওয়েবসাইটে বলা হচ্ছে অংকটা ১১ কোটি ৪০ লাখ ডলার।  

ভারতের রেমিটেন্স আয়ের (ইনকামিং) তালিকা।  সূত্র: 'পিউ রিসার্চ সেন্টার

ভারতের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ীও ভারতে রেমিটেন্সের সোর্স হিসেবে বাংলাদেশ ২৫তম (১১ কোটি ৪০ লাখ ডলার) যা পিউ রিসার্চ সেন্টার এর তথ্যের সঙ্গে মিলে যায়। টাইমস অব ইন্ডিয়ার রিপোর্টে এটাও উল্লেখ করা হয় যে, ভারত থেকে রেমিটেন্স আনায় বাংলাদেশের অবস্থান ১ম, (৪ বিলিয়ন ডলার)। অর্থাৎ, বাংলাদেশ থেকে ভারতে যে পরিমাণ রেমিটেন্স যায় তার থেকে ৩৫ গুণ বেশি ভারত থেকে আয় করে বাংলাদেশ।

সুতরাং, ভারতের রেমিটেন্স আয় নিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি অনলাইন মাধ্যম যেসব তথ্য দিয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।