বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি (ঋণ তথ্য ব্যুরো) ডাটাবেজে সংরক্ষিত গত জুন পর্যন্ত তথ্যানুযায়ী এই ঋণখেলাপির সংখ্যা জানিয়ে মন্ত্রী ১০০ শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকাও প্রকাশ করেছেন। এই ঋণখেলাপির কারণে জর্জরিত ৮৮টি সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তালিকাও প্রকাশ করেছেন তিনি।
বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগ দলীয় সংরক্ষিত সংসদ সদস্য বেগম পিনু খানের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন অর্থমন্ত্রী।
সংসদে দেওয়া অর্থমন্ত্রীর তালিকা অনুযায়ী শীর্ষ ১০০ ঋণখেলাপির মধ্যে রয়েছে মোহাম্মদ ইলিয়াস ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড,কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেম লি., ম্যাক্স স্পিনিং মিলস, রাবেয়া ভেজিটেবল ওয়েল ইন্ডাট্রিজ, রাইজিং স্টিল মিল, ঢাকা ট্রেডিং হাউজ, বেনেটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, আনোয়ারা শিপিং মিলস, ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস, ইয়াসির এন্টার প্রাইজ, চৌধুরী নিটওয়ার,সিদ্দিক ট্রেড, রুপালী কম্পোজিট লেদার ওয়ার, আলফা কম্পোজিট টয়েলস হলমার্ক ফ্যাশন লিমিটেড, মুন্নু ফেব্রিক্স, ফেয়ার ইয়ার্ন প্রসেসিং লিমিটেড, ফেয়ার ট্রেড ফেব্রিক্স, শাহরিজ কম্পোজিট টয়েল লিমিটেড, ম্যাক ইন্টারন্যাশনাল, সুরুজ মিয়া শিপিং মিলস,প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড, সালেহ কার্পেট মিল, পদ্মা পলি কটন নিট ফেব্রিক্স, এ কে স্টিলের নাম। সংসদে অর্থমন্ত্রীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকে বকেয়া ঋণের পরিমাণ ১৮ হাজার ৮৪০ কোটি। এরপরই রয়েছে জনতা ব্যাংক, তাদের বকেয়া ঋণের পরিমাণ ১৪ হাজার ৮৪০ কোটি। এছাড়া অগ্রণী ব্যাংকের ৯ হাজার ২৮৪ কোটি, বেসিক ব্যাংকের ৮ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা রয়ে গেছে বকেয়া। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংকে বকেয়া ঋণের পরিমাণ বেশি। এর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকে ৫ হাজার ৭৬ কোটি, সাউথইস্ট ব্যাংকে ৩ হাজার ৯৯৮ কোটি এবং প্রাইম ব্যাংকের ৩ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা ঋণ বকেয়া রয়েছে।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন প্রকল্পের অনুকূলে বিভিন্ন দাতা দেশ/সংস্থা থেকে প্রাপ্ত বৈদেশিক সাহায্যের আশ্বাসের (কমিটমেন্ট) পরিমাণ ছিল ৩৬১ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তন্মধ্যে ঋণের পরিমাণ ৩৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, অনুদানের পরিমাণ ১ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বৈদেশিক সাহায্যের প্রাপ্তির (ডিসবার্সমেন্ট) পরিমাণ ছিল ১৮৭ কোটি ৮৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তন্মধ্যে ঋণের পরিমাণ ১৮৫ কোটি ৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং অনুদানের পরিমাণ পরিমাণ ২ দশমিক ৪২ মার্কিন ডলার।
সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে মুহিত জানান, সরকার পুঁজিবাজারের শৃঙ্খলা তথা গতিশীলতা ও আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করেছে। ফলে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের আস্থা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। আরও গতিশীলতা ও আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এবং মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি নিয়মিত সমন্বয় সভা করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
এসএম/এসকে/এইচএ/