লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীরপাড়ে প্রায় ৬০ হাজার জেলের বসবাস। জেলার রামগতি, কমলনগর, রায়পুর ও সদর উপজেলার জেলেরা মাছ আহরণ করে জীবিকা চালায়।
রোববার (৭ অক্টোবর) বিকেলে কমলগরের মেঘনাপাড়ের ফলকন ও মাতাব্বরহাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে।
জেলেরা দলবেঁধে জাল বুনছেন। কেউ কেউ নৌকার ইঞ্জিন মেরামত করছেন। এ সময় নদীতে কোনো মাছ ধরার নৌকা চোখে পড়েনি।
মেঘনাপাড়ের জেলেরা বলছেন, এবার নদীতে কাঙ্খিত ইলিশ ধরা পড়েনি। মহাজনের দাদনের টাকাও শোধ হয়নি। আহরণে গিয়ে জাল-নৌকার অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নতুন করে জাল কেনার পুঁজি নেই। ছেঁড়া জাল সেলাই করে রাখছেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে এ জালে দিয়ে মাছ আহরণ করবেন। রোববার থেকে ইলিশের প্রজনন মৌসুম শুরু হয়েছে। চলবে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত । এ ২২দিন লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের প্রজাতির মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রজনন ক্ষেত্রে মাছ ধরা যাবে না। এ সময় মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ। এ আইন আমান্য করলে জেল অথবা জরিমানা এবং উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। মাছ ধরতে না পারায় স্থানীয় জেলেরা এখন ডাঙায় মাছ ধরার সব উপকরণ ঠিকঠাক করে নিচ্ছেন।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য অফিস থেকে জানা গেছে, আশ্বিন মাসের বড় পূর্ণিমার আগের চার দিন, পূর্ণিমার দিন ও পরের ১৭দিনসহ মোট ২২ দিন ইলিশের প্রজনন সময়। এ সময় সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মা ইলিশ এসে লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় ডিম ছাড়ে। একটি বড় ইলিশ ২৩ লাখ পর্যন্ত ডিম ছাড়তে পারে। বেশি ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যে নিবিঘ্নে যাতে মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পারে সে জন্যই ইলিশসহ সব ধরনের প্রজাতির মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যে কারণে জেলেদের নদীতে মানা। তারা এখন ডাঙায়
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম মহিব উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, লক্ষ্মীপুরের রামগতি থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকায় মাছ ধরা যাবে না। এ আইন আমান্য করলে একবছর থেকে দু' বছরের জেল অথবা জরিমানা এবং উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা ফের নদীতে জাল পেলবেন। সে লক্ষ্যে তারা জাল ও নৌকা মেরামত করতে ব্যস্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৮
এসআর/এএটি