তিনি বলেন, সরকারের বাজেট লক্ষ্য পূরণে করের আওতা বাড়াতে এনবিঅার এ পরিকল্পানা নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানী গুলশানের একটি হোটেলে ‘ক্যাটালাইজিং ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স ফর বাংলাদেশ মুভিলাইজেশন অ্যান্ড ইউটিলাইজেশন চ্যালেঞ্জেস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ‘ব্যক্তি খাতের আয়কর আহরণে বাংলাদেশের সম্ভাবনা’ ও ‘বাংলাদেশ কি বৈদেশিক সহায়তা ছাড়া চলতে পারে’ শীর্ষক দু’টি প্রতিবেদন প্রকাশ করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।
দু’টি গবেষণার মধ্যে ‘ব্যক্তি খাতের আয়কর আহরণে বাংলাদেশের সম্ভাবনা’ শীর্ষক গবেষণার উপর অংশ নিয়ে এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, প্রতি বছর সরকারে বাজেটের আকার বাড়ছে। তার জন্য করের আওতা বাড়াতে হচ্ছে। আর তাই করে আওতা বাড়ানোর একটি পরিকল্পনা নিয়েছে। তা হচ্ছে-ঢাকা শহরের যত ফ্ল্যাট ও বাড়ি আছে, এগুলো জরিপ করা হবে। এই ফ্ল্যাট ও বাড়ির মধ্যে থাকা ভাড়াটে ও ফ্ল্যাটের মালিকদের সবাইকে রিটার্নের মাধ্যমে আগামী ৬ মাসে করের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তার জন্য একটি টিম কাজ করছে।
পাশাপাশি ঢাকার অফিসগুলোর বৃদ্ধি করে উপজেলা পর্যায়ে নেওয়া হবে। উপজেলার রিসোর্স সেন্টার, ব্যবসায়ী এবং জনপ্রতিনিধিদের করের আওতায় আনার বিষয়ে নজর দেবে কর্মকর্তারা।
সরকার কাস্টমস, ভ্যাট এবং ট্যাক্স- এ তিনটি সোর্স থেকে রাজস্ব আহরণ করে উল্লেখ করে মোশাররফ হোসেন বলেন, কিন্তু বিশ্বায়নের ফলে আগামীতে কাস্টমস ডিউটি কমবে। তাই আমাদের ইনকাম ট্যাক্সকে গুরুত্ব দিতে হবে। আর করের আওতা বাড়ানোর জন্য রিটার্নধারীদের সংখ্যা বাড়াতে। তিনি বলেন, এখন সারা দেশে ই-টিআইয়েনের সংখ্যা ৩৮ লাখের বেশি। কিন্তু তার মধ্যে ২০ লাখ রিটার্ন দিচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমি চেষ্টা করছি, ব্যবসাবান্ধব ও ট্যাক্স ফেয়ারবান্ধব এনবিআর গড়ে তুলতে। এর মধ্যে ট্যাক্সের যারা আছে তাদের প্রশিক্ষিত করা, মোটিভেট করা এবং জনবল বৃদ্ধির জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছি। আশা করি এর সুফল পাওয়া যাবে।
এসময় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. মির্জা আজিজুল ইসলাম, সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান এবং সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন প্রমুখ।
সিপিডি সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খানের গবেষণায় বলা হয়, ৬৫ শতাংশ মানুষ মনে করে এনবিআরের কর ব্যবস্থায় দুর্নীতি বিরাজ করছে। পাশাপাশি ৫০ শতাংশ মানুষ মনে করে এনবিআরের কর ব্যবস্থা অত্যন্ত জটিল।
এক হাজার ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে তৈরি করা গবেষণায় বলা হয়, ২০১৮ সালে জরিপে বিগত বছরগুলোতে কেবল ৩২ শতাংশ মানুষ আয়কর দিয়েছেন। এর মধ্য উচ্চ আয়ের ২৫ শতাংশ মানুষের এক তৃতীয়াংশ গত বছর আয়কর দেননি। যারা করেছেন তাদের মধ্যে অনেকে কর ফাঁকি দিয়েছেন।
জরিপের ৭৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন কর ব্যবস্থায় ধনী-গরিবের মধ্যে পক্ষপাতদুষ্ট। ৫০শতাংশ মানুষকে মনে করেন এখনকার কর ব্যবস্থা অত্যন্ত জটিল। ৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন, এনবিআরের সেবা ও তার গুণগত মান বৃদ্ধির করলে জনগণ কর দিতে উৎসাহিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৮
এমএফআই/এসএইচ