ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আমেই প্রাণ ফ্রুটো, চলছে ‘ওপেন ডোর চ্যালেঞ্জ’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৮
আমেই প্রাণ ফ্রুটো, চলছে ‘ওপেন ডোর চ্যালেঞ্জ’ কারখানায় দেখানো হচ্ছে ফ্রুটো তৈরির প্রক্রিয়া

প্রাণের কারখানা ঘুরে: দেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বের ১৩৪টি দেশের মানুষের মন জয় করেছে প্রাণ ফ্রুটো। তবে পণ্যের জনপ্রিয়তায় ‘ঈর্ষান্বিত’ হয়ে অনেকে ফ্রুটোর বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় অনেকে বলছে প্রাণ ফ্রুটোয় আমের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয় মিষ্টি কুমড়া। পণ্যটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক কথাও লেখা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

আর তাদের এসব সংশয় ও ভুল ধারণা দূর করতে শুরু হয়েছে ‘প্রাণ ফ্রুটো ওপেন ডোর চ্যালেঞ্জ’। নভেম্বর মাসের ৩ তারিখ থেকে শুরু হওয়া এ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া হয়েছে প্রতি শনিবার (নভেম্বর মাসের শেষ শনিবার পর্যন্ত)।

এজন্য প্রাণ ফ্রুটো’র কারখানার দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত। যার মাধ্যমে দেখানো হচ্ছে কিভাবে প্রাণ ফ্রুটো ভোক্তার জন্য প্রস্তুত হয়।

শনিবার (১৭ নভেম্বর) এ চ্যালেঞ্জে অংশ নেওয়া অন্তত ৬০ জনকে দেখানো হয় কিভাবে প্রাণের কারখানায় প্রাণ ফ্রুটো জুস তৈরি হয়। সরাসরি কারখানা দেখতে এই চ্যালেঞ্জে ছিলেন শিক্ষক, চাকরিজীবী, সাংবাদিক, গৃহিণী, অভিনেতাসহ বিভিন্ন পেশাজীবী প্রতিনিধি। চমক হিসেবে ছিলেন নায়ক ইমন, অভিনেত্রী তমা মির্জা, কৌতুক অভিনেতা সজল ও পাভেল।

গাজীপুরের কালীগঞ্জ। যেখানে গড়ে উঠেছে প্রাণ গ্রুপের ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক। নামটা পার্ক হলেও এখানেই নিবিড় যত্নে তৈরি হয় আম থেকে জুস। আমের নির্যাস সযত্নে সংরক্ষণ করা হয়। এরপরেই স্বয়ংক্রিভাবে তৈরি হচ্ছে প্রাণ ফ্রুটো জুস।

কারখানা সরেজমিন পরিদর্শন করে চিত্রনায়ক নিরব বলেন, কিভাবে প্রাণ ফ্রুটো জুস তৈরি হয় তার সবকিছু নিজ চোখে দেখেছি। দেখে যতোটুকু মনে হয়েছে শতভাগ স্বাস্থ্যকর পরিবেশে জুস তৈরি হচ্ছে। কুমড়া নয় আমেই তৈরি হচ্ছে জুস। অনেকে এটা নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, তাদের উচিত কারখানা ভিজিট করা, তবেই তাদের ভুল ভাঙবে।

সরাসরি কারখানা পরিদর্শনে দেখা যায়, বিস্তৃর্ণ এলাকাজুড়ে অবস্থিত কারখানাটিতে প্রাণ ফ্রুটোর পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি ধাপের পর সেখান থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেরিয়ে আসছে প্রাণ ফ্রুটোর বোতল। উৎপাদনের মূল প্রক্রিয়াটা শুরু হয় আমের পাল্প নেওয়া থেকে। একটি পাইপের সাহায্যে আমের পাল্প বিশাল আকারের ব্লেন্ডিং মেশিনে পৌঁছে। সেখানে এটি পাস্তুরাইজেশন হয়ে আরেকটি ব্লেন্ডিং মেশিনে পৌঁছে। এরপর পাল্পের সঙ্গে অন্যান্য উপাদান মিশে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় চূড়ান্তভাবে তৈরি হয় জুস।

ওপেন ডোর চ্যালেঞ্জে ছিলেন তারা

এখানে কোনো ধরনের হাতের স্পর্শ ছাড়াই প্রতিটি বোতলে জুস ভর্তি হয়। তার আগে মেশিনের সাহায্যে প্লাস্টিকের বোতলগুলো পরিষ্কার করা হয়ে থাকে। বোতলে জুস পূর্ণ হওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে বোতলে ছিপি দেওয়া হয়। এরপর তার গায়ে মোড়ক ও উৎপাদন তারিখ দেওয়া হয়; সেটিও স্বয়ংক্রিয়ভাবে।

জুস তৈরির পুরো প্রক্রিয়ায় এক বিন্দুও হাতের স্পর্শ থাকে না। প্রতি ঘণ্টায় এই কারখানায় ৩০ হাজার বোতল প্রাণ ফ্রুটো উৎপাদিত হয়ে থাকে। অর্থাৎ প্রতি মিনিটে ৫০০ বোতল জুস তৈরি হয়ে থাকে।

কথা হয় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরএন পাল’র সঙ্গে। তিনি বলেন, অনেকে প্রাণ ফ্রুটো নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছেন, আপনাদের বলবো, প্লিজ, কারখানা পরিদর্শন করে যান। আপনাদের জন্য আমাদের দরজা সব সময় খোলা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, অন্তত এক লাখ কৃষকের কাছ থেকে আম সংগ্রহ করা হয়। শুধু সংগ্রহ নয়, ওই আম চাষিদের বিনামূল্যে সার, প্রশিক্ষণসহ ফ্রিজিং পদ্ধতিতে পুরো বছরের জন্য পাল্প সংরক্ষণ করা হয়। সাধারণত এভাবে পাল্প দুই বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা হয়।

চিত্রনায়িকা তমা মির্জা বলেন, জীবনে প্রথম কোনো জুসের কারখানা ভিজিট করলাম। নিজের চোখে সবকিছু দেখে ভালো লাগছে। প্রাণ ফ্রুটো স্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে। আমের পাল্পও দেখলাম। পাল্প খেয়ে মনে হয়েছে তাজা আম। অনেকে বলেন মিষ্টি কুমড়া দিয়ে জুস তৈরি হয়। এগুলো মিথ্যা ও গুজব ছাড়া কিছুই নয়।

‘প্রাণ ফ্রুটো ওপেন ডোর চ্যালেঞ্জ’ অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির ব্রান্ড ম্যানেজার আশফাকুর রহমান, হেড অব ডিজিটাল মিডিয়া আজিম হোসেন, সিনিয়র ম্যানেজার নাজমুল হাসান হিমেল, সহকারী ম্যানেজার আনিসুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৮
এমআইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।