কুড়িগ্রামের যুবকরা নিজেদের বেকারত্ব দূরীকরণে টার্কির খামার গড়ে তুলে সফলভাবে উৎপাদন শুরু করলেও তা বিক্রি করতে নির্ভর করতে হচ্ছে ঢাকা বা চট্টগ্রামের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের উপর।
স্বল্প সময়ের মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলায় গড়ে উঠেছে ২৫টি বাণিজ্যিক খামার।
কুড়িগ্রাম শহর লাগোয়া ধরলা সেতুর পূর্বপ্রান্তে টার্কির বাণিজ্যিক খামার গড়ে তুলেছেন যুবক আব্দুল মজিদ রিপন। প্রায় তিন বছর আগে গড়ে ওঠা টার্কির খামার ঘিরে বাস্তবায়ন করছেন তার লালিত স্বপ্ন। শুরুতে খুলনা থেকে একশ টার্কির বাচ্চা এনে লালন-পালন শুরু করলেও বর্তমানে তার খামারে বেড়ে উঠছে চার শতাধিক টার্কি। খামারে চার থেকে পাঁচ মাসেই টার্কির বাচ্চা পুর্ণাঙ্গ রূপ নেয়। একেকটি টার্কি লালন-পালনে সব মিলেই খরচ পড়ে ৮শ থেকে ৯শ টাকা। একেকটি বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকায়। গড়ে মাত্র একশ টার্কি থেকে চার থেকে পাঁচ মাসে সব খরচ বাদ দিয়ে লাভ করছেন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। শুধু টার্কি পালনই নয়, যুবক রিপন ইনকিউবিটরের মাধ্যমে ডিম থেকে এখন উৎপাদন করছেন টার্কির বাচ্চাও।
কুড়িগ্রাম জেলায় প্রথম টার্কির খামার মালিক আব্দুল মজিদ রিপন বাংলানিউজকে জানান, খামারে ৮ থেকে ১০ কেজি ওজনের একেকটি টার্কি বড় করতে বাচ্চা, খাবার, ওষুধসহ সব মিলে খরচ পড়ে ৮শ থেকে ৯শ টাকা। আর বর্তমান বাজারে প্রতিকেজি টার্কি বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে ৪শ টাকায়। টার্কি লালন-পালনে বড় ধরনের কোনো ব্যাঘাত না ঘটলে দ্বিগুণ লাভ সম্ভব। আর উৎপাদিত টার্কির ডিম থেকেই বাচ্চা ফুটিয়ে প্রতিটি বাচ্চা পাইকারি ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মো. আব্দুল হাই সরকার বাংলানিউজকে জানান, কুড়িগ্রাম জেলার আবহাওয়া টার্কি পালনের উপযোগী হওয়ায় টার্কি উৎপাদনে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে এবং বেকার যুবকরা নিজ উদ্যোগে টার্কির খামার গড়ে তুলছেন। আমরা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে টার্কি পালনকারীদের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছি।
তিনি আরো জানান, শাক-সবজি, ঘাস ও বিভিন্ন উদ্ভিদের পাতা টার্কির প্রধান খাবার। আচরণে এরা বোকা ধরনের হওয়ায় এদের নিরাপত্তার ব্যাপারে বেশি গুরুত্ব দিতে হয় খামারিদের। তবে সরকারিভাবে সঠিক বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তোলা গেলে এই টার্কি পালন করেই স্বাবলম্বী হতে পারবে এ জেলার যুবকরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৯
এফইএস/এএ