ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ডব্লিউটিও’র সহযোগিতা চাইলেন বাণিজ্যমন্ত্রী

বিজনেস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৯
ডব্লিউটিও’র সহযোগিতা চাইলেন বাণিজ্যমন্ত্রী

ঢাকা: বিশ্ব বাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উন্নয়নশীল বাংলাদেশের জন্য ডব্লিউটিও’র সহযোগিতা চাইলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। 

তিনি বলেন, বিশেষ করে ট্রিপস চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সুবিধা বাংলাদেশের প্রয়োজন। ২০৩৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এলডিসিভুক্ত দেশগুলো এ সুবিধা পাবে।

ওষুধ শিল্প বাংলাদেশের জন্য খুবই সম্ভাবনাময়।

বুধবার (৩ এপ্রিল) জেনেভায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদর দফতরে বাংলাদেশের পঞ্চম ট্রেড পলিসি রিভিউ-এর প্রথম সভায় বাংলাদেশের বাণিজ্য, শিল্প, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ ও সংস্কারসমূহ তুলে ধরতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।  

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ট্রেড পলিসি রিভিউ বডির চেয়ারম্যান অ্যাম্বাসেডর টিহাংকির সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রায় সব সদস্যের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার পরামর্শ মোতাবেক বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্যে সক্ষমতা অর্জন করেছে। রফতানি বাণিজ্যে বাংলাদেশ সুনামের সঙ্গে এগিয়ে চলছে। গত অর্থ বছরে বাংলাদেশের রফতানি ছিল প্রায় ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের রফতানি প্রত্যাশার চেয়েও ভালো। বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। বরাবরই বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে।

টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বেড়িয়ে উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশের প্রথম ধাপ সফলভাবে অতিক্রম করেছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতিতে চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ এখন পেপারলেস ট্রেডে সক্ষমতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ ডব্লিউটিও-এর পেপারলেস ট্রেড পলিসি চুক্তিতে প্রথম স্বাক্ষরকারী দেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভিশন-২০২১’ ঘোষণা করেছেন। ২০২১ সালের আগেই ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হবে এবং ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের উন্নত দেশ।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। আগামী ১৫ বছরে এখানে ১০ মিলিয়নের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। অতিরিক্ত রফতানি আয় হবে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মুক্ত আলোচনার সদস্য দেশসমূহ বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন, ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত অব্যাহতভাবে প্রায় ৮ শতাংশ জিডিপি গ্রোথ রেট, মূল্যস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, বিদ্যুৎসহ অবকাঠামো উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়নসহ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ক্ষেত্রে উন্নয়নের প্রশংসা করেন।  

সভায় সদস্যরা দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নয়নের জন্য প্রণিত ভিশন ২০২১সহ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। বিশ্বব্যাংকের রেঙ্কিং অনুযায়ী ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার জন্য ও প্রশংসা করেন।  

উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে অনেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। সভায় বাংলাদেশের আমদানি শুল্ক কমানোসহ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নীতিমালাসমূহ উদারিকরণের জন্য একাধিক দেশের প্রতিনিধি অনুরোধ জানান।

৫ এপ্রিল বাংলাদেশের ট্রেড পলিসি রিভিউ-এর দ্বিতীয় পর্বে অর্থাৎ প্রশ্নাত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে ১৮টি দেশ ১৪০টি লিখিত প্রশ্ন দাখিল করেছে। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ওই প্রশ্নসমূহের জবাব দেবেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির নেতৃত্বে বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, জেনেভার বালাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি শামীম এম আহসানসহ ১৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল এ ট্রেড পলিসি রিভিউ সভায় অংশগ্রহণ করেন।  

এছাড়া বাণিজ্যমন্ত্রী গত ২ এপ্রিল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. রবার্তো আজাভেদোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে মিলিত হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৯
জিসিজি/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।