ঢাকা, রবিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ইলিশের দাম শুনেই ফিরতে হচ্ছে বাজার থেকে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৯
ইলিশের দাম শুনেই ফিরতে হচ্ছে বাজার থেকে ইলিশ। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: পহেলা বৈশাখের সঙ্গে নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে ইলিশের। কিন্তু দাম চড়া হওয়ায় খুলনায় এবার বৈশাখে অনেকের পাতে উঠবে না ইলিশ। এক কেজি সাইজের নদীর একটি ইলিশের দাম দুই হাজার টাকা। যা সাধারণ মানুষের নাগালের একেবারেই বাইরে। বেশি দামেও কিনছেন কেউ কেউ। অনেকে আবার দাম শুনেই বেজার হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) খুলনার নিউমার্কেট ও কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তে এ দৃশ্য দেখা গেছে।

অনেক ক্রেতা অভিযোগ করেছেন, বরফ রেখে ইলিশ মাছ তাজা বলে বিক্রি করা হচ্ছে, দামেও নেই কোনো ছাড়।

উৎসবকে রাঙিয়ে তুলতে নিতান্ত নিরুপায় হয়ে ক্রেতাদের বেশি দাম দিয়েই কিনতে হচ্ছে রূপালি ইলিশ।

তারা বলছেন, পহেলা বৈশাখের সকালে পান্তাভাত ও মাছ বিশেষ করে ইলিশ খাওয়ার প্রচলন আগে থেকেই চালু রয়েছে। তবে ইলিশ মাছ খাওয়ার রীতিতে কিছুটা হলেও ভাটা পড়েছে। এর কারণে গত দু’বছরে ইলিশ নিয়ে ক্রেতাদের মাতামাতি কিছুটা হলেও কম ছিলো। কিন্তু এবার আবারও আগের মতোই ইলিশ নিয়ে কিছুটা হৈ চৈ পড়েছে বাজারগুলোতে। এবার দাম বেশি থাকায় এবার অনেকেই ইলিশের বদলে পান্তা আয়োজনে রুই মাছ রাখছেন। ইলিশ বিক্রি করছেন একজন ব্যবসায়ী।  ছবি: বাংলানিউজমোহাম্মদ রেজা নামে এক ক্রেতা বলেন, ইলিশের দাম যেমন চড়া সেসঙ্গে রুই মাছের দামও বেড়েছে। ৪শ’ টাকা দামের রুই এখন ছয় থেকে সাতশ’ টাকা।

মানি মিয়া নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ইলিশের বাজারে বইছে উত্তাপ। গত বছরের তুলনায় এবার ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণের চেয়েও বেশি দামে।

ইলিশ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এবার ইলিশের সরবরাহ কম তবে চাহিদা বেশি। যে কারণে দামও একটু বেশি। তাছাড়া এখন ইলিশের ভরা মৌসুম না।

তারা জানান, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের কারণে বৈশাখ কেন্দ্রিক ইলিশের চাহিদা কিছুটা হলেও কমে যায়। যে কারণে দামও কম ছিলো। তবে দু’বছর বিরতি দিয়ে এবার আবার ইলিশের দাম বেড়েছে।

কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য আড়তের মুজাহিদ ফিসের আড়তদার আবু মুসা বাংলানিউজকে বলেন, সাগরের কোনো ইলিশ বাজারে নেই বলেই চলে। নদীর ইলিশ ৫০০ গ্রাম আকারের বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকা, ৭০০-৮০০ গ্রাম ইলিশ ১৬০০-১৭০০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার টাকা। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ২৫শ’টাকা। এছাড়া কোল্ড স্টোরে রাখা ৫০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হয় ৭০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশ ১ হাজার টাকা। এক কেজি ওজনের ১৩-১৪শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

তিনি জানান, গত বছরের চেয়ে এবার কেজিপ্রতি ১-২শ’ টাকা দাম বেশি।

একই বাজারের আড়তদার মো. ফারুক হোসেন বলেন, খুলনার বাজারে সাগরের কোনো ইলিশ নেই। বাজারে সরবরাহ কম কিন্তু চাহিদা বেশি। তাই অন্য সময়ের চেয়ে ইলিশ মাছের দাম বেশি।

নিউমার্কেট মাছ বাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. ইদ্রিস হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, শেষ মুহূর্তে বেচা বিক্রি ভালো। পহেলা বৈশাখে ইলিশ মাছের চাহিদা বাড়ে। তবে তুলনামূলক এবার দাম একটু বেশি বেড়েছে। কারণ মৌসুমে এবার আশানুরূপ মাছ ধরা পড়েনি।

খুলনা জেলা বাজার কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তরফদার বাংলানিউজকে বলেন, এখন ইলিশের মৌসুম না হওয়ায় বাজারে সরবরাহ অনেক কম। এছাড়া প্রতি বৈশাখেই ইলিশের চাহিদা বেড়ে যায়। যে কারণে দামও বাড়ে।

তিনি বলেন, ভারতে নববর্ষে বাংলাদেশের ইলিশের বেশ চাহিদা। চোরাপথে পাচারসহ নানাভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে যাচ্ছে বাংলার ইলিশ। যে কারণে দেশে ইলিশের দাম বেড়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৯
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।