ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

গরুর ঘাসে প্রোটিন বাড়াতে ব্যয় ৫৩ কোটি টাকা

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
গরুর ঘাসে প্রোটিন বাড়াতে ব্যয় ৫৩ কোটি টাকা গরু/ ফাইল ফটো

ঢাকা: গো-খাদ্যের চাহিদা পূরণ করতে এবং ঘাসের প্রোটিন বাড়াতে ৫৩ কোটি টাকা খরচ করবে সরকার। সারাদেশের সব উপজেলায় উন্নতমানের ঘাস উৎপাদন করবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

বর্তমানে গরুর ঘাসে প্রোটিনের উপস্থিতি ৭ থেকে ৮ শতাংশ, এটা ১২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে প্রকল্পের আওতায়। খামারী পর্যায়ে উচ্চ উৎপাদনশীল জাতের ঘাস চাষ সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয় করার মাধ্যমে গবাদিপ্রাণির পুষ্টির উন্নয়ন করা হবে।

‘দেশব্যাপী প্রাণিপুষ্টির উন্নয়নে প্রযুক্তি প্রদর্শন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে। চলতি সময় থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে খামার পর্যায়ে প্রাণিপুষ্টি উন্নয়ন প্রযুক্তি প্রদর্শন এবং দুর্যোগকালীন সময়ে গো-খাদ্যের প্রাপ্যতা নিশ্চিতকল্পে সাইলেজ প্রযুক্তি গ্রহণে খামারিদের উদ্বুদ্ধ করা হবে। খামারীদের প্রাণিপুষ্টি সংক্রান্ত আধুনিক পদ্ধতি ও কৌশল বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বাংলাদেশে কাঙ্খিত মাত্রায় প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন করা যাচ্ছে না। এর প্রধান সমস্যা গো খাদ্যের অভাব। দেশে ধান, গম, ভুট্টা, ডাল প্রভৃতি শষ্য উপজাত গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এসব খাদ্যে খাদ্যমান খুবই কম থাকে, অন্যদিকে অনেক ব্যয় সাপেক্ষ, যা গবাদি পশুর দৈহিক ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট নয়।

এর ফলে প্রাণিসম্পদ হতে কাঙ্খিত মাত্রায় দুধ ও মাংস উৎপাদনের অধিক উৎপাদনশীল উন্নত জাতের কাঁচা ঘাসের কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে দেশে সবুজ ঘাসের চাহিদা ১৫৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন অথচ উৎপাদন মাত্র ৩৪ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন, যা বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া যায়। যেমন- রাস্তার ধার, অনাবাদি জমি, বাড়ির আশপাশ, বাঁধ  ও জমির আইল। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ঘরবাড়ি বাড়ছে, কমছে কৃষি জমি। তবে খাদ্যভাসের কারণে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা বাড়ছে। ফলে দেশে উৎপাদিত দুধ ও মাংসের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ক্রমবর্ধমান এ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে গবাদি পশু পালন ব্যবস্থাপনা বাড়ানো হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় দুগ্ধ খামারে উন্নত জাতের ঘাসের স্থায়ী জার্মপ্লাজম নার্সারী স্থাপন করা হবে সেখানে পরবর্তীতে সারাদেশে ঘাসের কাটিং বিতরণ করা হবে। কৃষকদের মাঝে সবুজ ঘাসের বিভিন্ন সংরক্ষণ পদ্ধতি শেখানো হবে, যেমন সাইলেজ (কাঁচা ঘাস সংরক্ষণ), সবুজ ঘাসের খড় ইত্যাদি। নিচু জমি, রাস্তারপাড়, অনাবাদি জমি, বাড়ির আশপাশ, বাঁধ, জমির আইল ও রেল লাইনের পাশে উন্নত ঘাস চাষে কৃষকদের উৎসাহী করা হবে। এসব স্থানে প্রায় ১ হাজার ৮৩০টি উন্নত প্রজাতির ঘাস চাষ শেখানে হবে। এছাড়া ঘাস চাষ প্রদর্শনী, সবুজ খড় সংরক্ষণ প্রদর্শনী এবং সাইলেজ প্লট স্থাপন করা হবে। যাতে করে ঘাসে প্রোটিনের উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে পরিচালক (সম্প্রসারণ) মো. লুৎফর রহমান খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বর্তমানে গো-খাদ্যে পুষ্টিগুণ কম। এই জন্য আমরা প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছি। ঘাসে বর্তমানে পুষ্টিগুণ ৭ থেকে ৮ শতাংশ, এটাতে ১২ শতাংশে নিয়ে যাবো। বর্তমানে খামারিরা দানাদার খাবার ব্যবহার করে পশু পালন করে। এতে একদিকে খাদ্যমান কম অন্যদিকে ব্যয়ও বেশি। তাই সারাদেশে ঘাসের প্রোটিন বৃদ্ধির জন্যই ৫৩ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১০২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
এমআইএস/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।