ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

৫১ শতাংশ খানার কোনো আয় নেই: ব্র্যাকের জরিপ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২০
৫১ শতাংশ খানার কোনো আয় নেই: ব্র্যাকের জরিপ

ঢাকা: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে ঘোষিত ছুটির ফলে ৯৫ শতাংশ মানুষ উপার্জনের দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৫১ শতাংশ  উত্তরদাতার খানাভিত্তিক আয় শূন্যে নেমে এসেছে, অর্থাৎ কোনো আয়ই নেই। দৈনিক মজুরির ওপর নির্ভরশীল ও স্বল্প আয়ের মানুষদের ৬২ শতাংশ চাকরি বা উপার্জনের সুযোগ হারিয়েছেন। 

আর্থিক কর্মকাণ্ডের দিক থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন ২৮ শতাংশ ব্যক্তি। সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার আগে যেখানে খানাভিত্তিক গড় মাসিক আয় ছিল ২৪ হাজার ৫৬৫ টাকা, সেখানে মে মাসে ৭৬ শতাংশ কমে ৭ হাজার ৯৬ টাকায় নেমে আসে।

শহর এলাকায় আয় কমার হার (৭৯ শতাংশ) পল্লী অঞ্চলের (৭৫ শতাংশ) তুলনায় কিছুটা বেশি।

মঙ্গলবার (৯ জুন) এক ডিজিটাল সংবাদ সম্মেলনে এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয় বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায় ব্র্যাক।  

এসময় প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বিষয়ক বিভাগের সাবেক প্রধান সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী, ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন পরিচালক শামেরান আবেদ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান এবং ব্র্যাকের পরিচালক নবনীতা চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন পরিচালক কেএএম মোর্শেদ।
 
পাঁচ জেলার উত্তরদাতারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বলে জরিপে বেরিয়ে এসেছে: পিরোজপুর (৯৬ শতাংশ), কক্সবাজার (৯৫ শতাংশ), রাঙামাটি (৯৫ শতাংশ), গাইবান্ধা (৯৪ শতাংশ) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া (৯৩ শতাংশ)।   

পুরুষ-প্রধান খানার চেয়ে নারী-প্রধান খানাগুলো আর্থিক দিক থেকে কিছুটা বেশি নাজুক। নারী-প্রধান খানার আয় কমেছে ৮০ শতাংশ অন্যদিকে পুরুষ-প্রধান খানার আয় কমেছে ৭৫ শতাংশ। নারী-প্রধান খানাগুলোর মধ্যে ৫৭ শতাংশ জানিয়েছে বর্তমানে তাদের কোনো উপার্জনই নেই। পুরুষ-প্রধান খানাগুলোর ৪৯ শতাংশএ কথা জানিয়েছে।  

বেশিরভাগ উত্তরদাতা জানিয়েছেন নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা আগের মতো আছে, ১১ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা মনে করেন করোনা ভাইরাস সংক্রমণের এই সময়ে নারীর প্রতি পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে। অধিকাংশ উত্তরদাতা (৫৮ শতাংশ) মনে করেন সংক্রমণকালীন মানুষের দারিদ্র্য বৃদ্ধির প্রধান কারণ।  

চার ভাগের তিন ভাগ উত্তরদাতা (৭৬ শতাংশ) জানিয়েছেন, তারা সংক্রমণরোধী পদক্ষেপগুলো সব সময় মেনে চলেন। বাকিরা অনিয়মিতভাবে অনুসরণ করেন, যা আশঙ্কাজনক। ৭৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন তারা করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হবেন না। এ বিশ্বাস গ্রামাঞ্চলের চেয়ে (৮১ শতাংশ) শহরে সামান্য কম (৭১ শতাংশ)। এ উদাসীনতা সংক্রমণ আরো ছড়িয়ে দেওয়ায় ভূমিকা রাখবে।

আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা পৌঁছানো বিষয়ে উত্তরদাতাদের ৩৮ শতাংশ মনে করেন অভাবী পরিবারগুলোর কাছে সহায়তা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে আরো সমন্বয় প্রয়োজন। নগর এলাকার অধিবাসী উত্তরদাতাদের (৬২ শতাংশ) তুলনায় গ্রামাঞ্চলের উত্তরদাতাদের (৭২ শতাংশ) মধ্যে সহায়তার প্রয়োজন কিছু বেশি বলে জরিপে বেরিয়ে এসেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫১ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২০
এসই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।