মঙ্গলবার (৯ জুন) সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘কোভিড-১৯: সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ ও ত্রাণ কর্মসূচির প্রাথমিক মূল্যায়ন’ শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল সংলাপে এ মতামত দেন আলোচকরা।
সংলাপে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এবং গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম যৌথভাবে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
সিপিডির ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বাধীন পর্যালোচনা (আইআরবিডি)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এটা প্রস্তুত করা হয়েছে।
আলোচকরা বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের দুর্বলতা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার বাধাগ্রস্ত করবে। কোভিড-১৯ অতিমারির ধকল কাটাতে সরকার ঘোষিত বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ সুষ্ঠু ও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন না হলে দেশের অর্থনীতির পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হবে।
‘দেশের তৈরি পোশাকখাতের জন্য প্রণোদনা ঘোষিত হলেও পোশাক শ্রমিকদের একটি বড় অংশ পূর্ণাঙ্গ বেতন ও অন্য ভাতাদি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং চাকরি হারাচ্ছেন। সরকারের বিভিন্ন ত্রাণ কার্যক্রমে বাছাই ও বিতরণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এসব সমস্যার সঠিক সমাধান না হলে প্রকৃত অংশীজনেরা প্রণোদনার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। ’
ফাহমিদা খাতুন বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাতে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম চলে আসছে। ইন্টারপোল তাদের সাম্প্রতিক একটি বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশকে কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে আর্থিক প্রতারণার ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর তালিকায় রেখেছে। এ অবস্থায় সুশাসনের অভাব ও আইনের শাসন প্রয়োগ না হলে ক্রমবর্ধমান মন্দ ঋণের চাপ ও তারল্য সংকটের ঝুঁকি নিয়ে সুষ্ঠুভাবে সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম উল্লেখ করেন, গার্মেন্টস শ্রমিক ও ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোক্তাদের একটি বড় অংশ এই প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর সুবিধা পাচ্ছে না। সিপিডির জরিপ অনুযায়ী, প্রায় ১৫ শতাংশ শ্রমিক তাদের এপ্রিল মাসের পূর্ণাঙ্গ বেতন পেয়েছেন, বাকিরা কেউ আংশিক পেয়েছেন এবং প্রায় ২৭ শতাংশেরও বেশি শ্রমিক অর্ধেকেরও কম বেতন পেয়েছেন কিংবা একেবারে কিছুই পাননি।
‘প্রায় ৬৩ শতাংশ শ্রমিক তাদের বাসাভাড়া পরিশোধ করতে পারেননি এবং জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৩৫ শতাংশ শ্রমিক বর্তমানে কর্মহীন অবস্থায় রয়েছেন। ’
ড. মোয়াজ্জেম বলেন, ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা অনিশ্চিত অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে পড়েছেন। তারা ব্যাংক থেকে প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ পাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে আরো আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করতে হবে।
সংলাপে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান হাবীব মনসুরসহ ব্যবসায়ী, গবেষক, উন্নয়নকর্মী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন অংশীজনেরা অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২২৫ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২০
এমআইএস/এএ