ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রেলওয়ের মহাপরিকল্পনা, ব্যয় হবে সাড়ে ৫ লাখ কোটি টাকা

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৩ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২০
রেলওয়ের মহাপরিকল্পনা, ব্যয় হবে সাড়ে ৫ লাখ কোটি টাকা ট্রেন

ঢাকা: রেলওয়েকে জনবান্ধব বিবেচনায় সরকার এ খাতের সার্বিক উন্নয়ন বাস্তবায়নে বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে স্বল্প খরচে ও নিরাপদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে রেলওয়েকে গড়ে তুলতে (২০১৬ থেকে ২০৪৫ সাল পর্যন্ত) ৩০ বছর মেয়াদে ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬২ কোটি টাকার মহাপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, এ মহাপরিকল্পনার আওতায় রেলওয়ে সম্প্রসারণ, নতুন রেলপথ নির্মাণ ও  সংস্কার, রেলপথকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর, নতুন ও বন্ধ রেলস্টেশন চালু করা হবে। এছাড়া এর আওতায় নতুন ট্রেন চালু ও সার্ভিস বৃদ্ধিসহ ট্রেনের কোচ ও লোকোমোটিভ সংগ্রহ করা হবে।

এরই মাঝে মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৫ কিলোমিটার নতুন রেললাইন, ২৫ কিলোমিটার পুরাতন রেললাইন সংস্কার, ৩০টি নতুন রেলসেতু, ১৪টি রেলসেতু পুনঃনির্মাণ, ১৩৬টি যাত্রীবাহী ক্যারেজ সংগ্রহ করা হবে।

এছাড়া বেনাপোল এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ও জামালপুর এক্সপ্রেস নামে ছয়টি নতুন ট্রেন চালু করা হবে। রাজবাড়ী ও ঢালারচর এক্সপ্রেসের বিদ্যমান চারটি ট্রেন সার্ভিস বর্ধিতকরণের কাজ এরই মাঝে সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা থেকে পদ্মাসেতু রেলসংযোগের কাজও এগিয়ে চলেছে। আগামী অর্থবছরে মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় ৯০০ কিলোমিটার ডুয়েল ট্র্যাক নির্মাণ করা হবে। একই সময়ে ১ হাজার ৫৮১ কিলোমিটার নতুন রেল ট্র্যাক নির্মাণ, ১ হাজার ৫২৭ কিলোমিটার রেলপথ সংস্কার করা হবে। ৩১টি লোকোমোটিভ সংগ্রহ, ১ শ’টি যাত্রীবাহী কোচ পুনর্বাসন এবং ২২২টি স্টেশনের সিগন্যালিং ব্যবস্থার মানোন্নয়ন করা হবে।

কুমিল্লা, লাকসাম হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম পর্যন্ত দ্রুতগতির ডাবল রেলপথ নির্মাণের কাজ চলমান। ফরিদপুরের ভাঙ্গা  হতে বরিশাল হয়ে পায়রা, নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত এবং সাতক্ষীরা থেকে মুন্সিগঞ্জ ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। ঢাকা শহরের চারপাশে বৃত্তাকার রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নেও উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।       

এসব ব্যাপারে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ৩০ বছর মেয়াদে ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬২ কোটি টাকার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে এ প্রকল্পের আওতায় পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করবো। ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের রেলপথের চেহারা বদলে যাবে। মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে রেলপথের সেবা।

বর্তমানে ৪৪টি জেলায় রেলপথ রয়েছে। ২০৪০ সালে ভোলা জেলা ছাড়া বাংলাদেশের ৬৩টি জেলা রেলপথে যুক্ত করা হবে। বরিশাল থেকে কীভাবে ভোলা জেলাকে যুক্ত করা যায়, সে বিষয়েও স্টাডি চলছে।

নির্মাণাধীন পদ্মাসেতুর কল্যাণে সরাসরি ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত যাবে রেলপথ। এরপর ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করবে সরকার। প্রথম ধাপে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে অনেকগুলো জেলা রেলপথে যুক্ত হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ রেলওেয়ের নতুন লোকোমেটিভ ও ওয়াগন পুনর্বাসন, রেললাইন সম্প্রসারণ ও পুনর্বাসন,  রেলস্টেশন সংস্কার ও আধুনিকীকরণ, কম্পিউটার বেইজড সিগনালিং ব্যবস্থা প্রবর্তন,  ডিজেল ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট নতুন রেলওয়ে সার্ভিস উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৭ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২০
এমআইএস/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।