বুধবার (২৩ জুন) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের মুখপাত্র মেহরিন মাহবুবের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় ওয়াশিংটনে এ ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
‘ওয়েস্টার্ন ইকনোমিক করিডোর এন্ড রিজিওনাল এনহ্যান্সমেন্ট পিইজি-১’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নে এ অর্থ ব্যয় করা হবে।
এ ঋণ প্রদান সম্পর্কে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলটি অনেকগুলো কৃষি ও প্রাকৃতিক পণ্য সমৃদ্ধ। এছাড়া আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হওয়ার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে এ অঞ্চলটির। আমাদের ঋণ প্রকল্পটি ওই অঞ্চলের জেলাগুলোর অর্থনীতিতে উদ্দীপনা, খামারগুলিকে বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। প্রকল্পের আওতাভুক্ত মহাসড়কের মাধ্যমে পশ্চিম অঞ্চলের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সংযুক্ত করবে। করিডোর বরাবর বাণিজ্য, ট্রানজিট এবং পণ্য সরবরাহ বাড়িয়ে এই অঞ্চলের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সহায়ক হবে।
বিশ্বব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাংক দেশের পশ্চিমাঞ্চলে সড়ক ও ডিজিটাল সংযোগ উন্নত করতে বাংলাদেশকে সহায়তার অংশ হিসেবে এই ৫০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে। প্রকল্পের আওতায় চারটি পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা জুড়ে যশোর-ঝিনাইদহ করিডোর ধরে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ উন্নত করতে ভূমিকা রাখবে। এ প্রকল্পের আওতায় বিদ্যমান ১১০ কিলোমিটার দুই-লেন মহাসড়ক-ভোমরা-সাতক্ষীরা-নাভারন ও যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করা হবে। এতে নিরাপদে সড়ক নেটয়ার্ক স্থাপন করা সম্ভব হবে। এছাড়া পশ্চিমাঞ্চলে বাংলাদেশের জলবায়ু সহনশীল চার-লেন মহাসড়কটি সরকারের ২৬০ কিলোমিটার অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়নের যে লক্ষ্য রয়েছে তা পূরণে ভূমিকা রাখবে। এর ফলে পশ্চিমাঞ্চলের ২ কোটি মানুষ উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
‘কর্মসূচির প্রথম ধাপে যশোর এবং ঝিনাইদহের মহাসড়কের ৪৮ কিলোমিটার উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া ৬০০ কিলোমিটার গ্রামীণ সংযোগ সড়ক উন্নয়ন এবং ৩২টি শহরের বাজার বা গ্রোথ সেন্টার উন্নয়ন করা হবে। এটি স্থানীয় অর্থনীতিকে উৎসাহিত করবে। ’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এদিকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটির আওতায় হাইওয়ে ধরে ফাইবার অপটিক কেবলগুলি নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী মূল্যের ইন্টারনেট অ্যাক্সেস সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। যা জরুরি প্রতিক্রিয়া এবং ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতার জন্য কোভিড-১৯ মহামারির মতো সংকট কাটাতে ভূমিকা রাখবে। কেননা কভিড-১৯ মহামারিটি চাকরি ও আয় হ্রাসের কারণে দরিদ্র্যদের উপর মারাত্মক আঘাত হেনেছে। এই ধাক্কা থেকে তাদের পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার জন্য প্রকল্পটি শ্রমনির্ভর কাজে নিযুক্ত করে ঝুঁকিপূর্ণ গ্রামীণ জনগণের তাৎক্ষণিক সামাজিক সুরক্ষা এবং জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে। এই ঋণের সুদের হার ২ শতাংশ। চার বছরের রেয়াতকালসহ ৩৪ বছরে বাংলাদেশকে এটি পরিশোধ করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও প্রকল্পের টাস্ক দলের নেতা রাজেশ রোহাতগি বলেন, এটি ভবিষ্যতে যে কোনও মহামারি বা সংকটের জন্য জরুরি প্রস্তুতি বড়ানোর জন্য দেশের দুটি মূল পরিবহন সংস্থা সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এমনকি কোভিড পরবর্তী সময়েও প্রকল্পটি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২০
এমআইএস/এইচজে