সোমবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, করোনা সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি এখনও পিছু না ছাড়লেও জীবন ও জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছেন। চেষ্টা করছেন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সীমিত পরিসরে দোকানপাট খোলার সুযোগ দেওয়ায় সারাদেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজধানীর বসুন্ধরা, বনানী, মহাখালী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, পুরান ঢাকাসহ প্রায় সব জায়গাতেই দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করেছে। চলছে স্বল্প মাত্রায় কেনা-বেচা।
আবারও ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মোবাইল দোকান ‘আকাশ টেলিকম’র সত্ত্বাধিকারী মো. আকাশ বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধের পর অনেকেই এখন দোকান খুলছেন। ক্রেতারাও কম-বেশি আসছেন। যদিও আগের তুলনায় বিক্রি অনেক কম, তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে যতটুকু ব্যবসা হচ্ছে, তাতে আশা করি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মোটামুটি একটা পর্যায়ে দাঁড়াতে পারবো।
মহাখালীর বিদেশি পণ্যের একটি ডিস্ট্রিবিউটর দোকানের মালিক মো. শামীম আহমেদ বলেন, করোনার জন্য দীর্ঘদিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। অনেকটা দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল মাথার ওপর জমা হয়ে গেছে। আস্তে আস্তে এখন দোকান খুলছি। আগের তুলনায় বিক্রি এখন অনেক কম, তবে কিছুটা হলেও হচ্ছে। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক হবে।
ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগের দোকানদাররাও একই রকম কথা বলেন। তাদের মতে, করোনা সংক্রমণ দিনদিন বৃদ্ধি পেলেও পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে চলতে হবে। দীর্ঘ লকডাউনে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে স্বল্প পরিসরে হলেও নিয়মিত চালু রাখতে হবে ব্যবসা।
পান্থপথের বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের দীপ্তমণি ফ্যাশন হাউজের সত্ত্বাধিকারী দীপ্ত চন্দ্র পাল বলেন, দীর্ঘ একটা সময় ধরে আমরা ঘরবন্দি ছিলাম। পরিস্থিতি পুরোটাই উল্টে গিয়েছিল। এখন একটু একটু করে স্বাভাবিক হচ্ছে। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারলেই সামনের দিকে ভালো কিছু হবে। বিশেষ করে গত ঈদে ব্যবসা হয়নি একদমই। এবার কতটুকু হবে সেটিও ঠিক জানি না। তবে কিছুটা হলেও স্বপ্ন আছে পুষিয়ে নেওয়ার।
এদিকে সার্বিক পরিস্থিতিতে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারেও গুরত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। তারা বলেন, ব্যবসায়ী সমিতি সভা করে করোনা পরিস্থিতিতে সবার সুরক্ষা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেওয়া ও তা মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে। অর্থনৈতিকভাবে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে হলে শারিরীকভাবে সুস্থ থাকাটাও অনেক বেশি জরুরি, ফলে সে ব্যাপারে তাদের নজর দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পুরান ঢাকার ইসলামপুরের বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শামসুল আলম বলেন, আমরা এখন সীমিত পরিসরে হলেও মোটামুটি বিক্রি করছি। করোনা পরিস্থিতির কারণে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকেই বলা হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য। সবকিছু ঠিক থাকলে আশা করি কিছু দিনের মধ্যেই আমরা আগের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২০
এইচএমএস/এইচজে