ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ফেসবুকে জনপ্রিয় হচ্ছে কোরবানির পশু বেচাকেনা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২০
ফেসবুকে জনপ্রিয় হচ্ছে কোরবানির পশু বেচাকেনা পশু বেচাকেনায় জনপ্রিয় হচ্ছে ফেসবুক

ঢাকা: করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় এবার কোরবানির পশু বেচাকেনা হচ্ছে অনলাইনেও। ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে শারীরিক দূরত্বের কথা বিবেচনায় রেখে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডিজিটাল পশুর হাট (অনলাইনে কেনাবেচা) আয়োজন হয়েছে।

ক্রেতারা ঘরে বসেই কিনতে পারছেন পছন্দের পশু। চাহিদার কথা মাথায় রেখে খামারিরাও বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন। তবে শুধু এই হাটেই নয়, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সক্রিয় হয়েছেন পশু নিয়ে।

বেশিরভাগ খামারিই পাশাপাশি হিসেবে বেছে নিচ্ছেন ফেসবুককে। অন্যান্য ই-কমার্স মার্কেট বা ডিজিটাল পশুর হাটের মতো ফেসবুকেও পশুর ছবি, ওজন, রং, খাদ্যাভ্যাস, উচ্চতাসহ নানা বৈশিষ্ট তুলে ধরছেন ব্যবসায়ীরা। এমনকি একটা দামও দিয়ে দিচ্ছেন সেখানে। প্রথম দিকে এভাবে কম সংখ্যক খামারি যুক্ত হলেও এখন ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রান্তিক থেকে শুরু করে নগরের ব্যবসায়ী কিংবা খামারিরাও তাদের পশুর বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন। এখন বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে।

সুলতান আহমেদ নামে একজন গ্রাম থেকে পশু এনে নিজ ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন। সঙ্গে নানা সুবিধা নিয়ে হাজির হয়েছেন। গরুর বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরে আবার বলছেন, অর্ডার (ক্রয়াদেশ) করলেই রাজধানী ঢাকার যেকোনো স্থানে পৌঁছে দেবেন তিনি নিজে।

বাংলানিউজকে সুলতান আহমেদ বলেন, বাজারে গরু কেনার ঝামেলায় যাওয়ার দরকার নেই। ফেসবুক থেকেই বুকিং দেওয়‍া যাবে। এজন্য আমাদের স্টকে আছে দেশি তিন মণ, পাঁচ মণ ও ২০ মণ ওজনের ২৫টি গরু। এসবের বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে যথাযথভাবে। অর্ডার করলেই হোম ডেলিভারিও দিচ্ছি আমরা। এছাড়া গরু বুঝে পেলেই টাকা পরিশোধের সুযোগ রয়েছে ক্রেতাদের।

মেহেরপুরের গাংনীর খামারি মো. শফি। তিনি প্রতিবছরের মতো এবারও তিনটি দেশি জাতের ষাঁড় পালন করেছেন। তবে ভালো দাম পাবেন কি-না, এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। এক্ষেত্রে তার গরু বিক্রির ধরন পাল্টেছে। এখন নিজের ছেলে আশরাফুল আলমের নামে খোলা ফেসবুক আইডিতে প্রচার করছেন গরুগুলো। দাম ও পশুর বৈশিষ্ট তুলে ধরেছেন তিনি।

গাংনীর আরেক খামারি ইকতার নিজের গ্রামের নামে খোলা ফেসবুক পেজে গরুর বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি লেখাপড়া জানি না। তবে গ্রামের কিছু ছেলে আমার গরু ইন্টারনেটে (ফেসবুকে) ছেড়েছে। এতে কয়েকজন দর-দাম করেছে। তবে আশানুরূপ দাম না হওয়ায় বিক্রি করিনি। এখান থেকে ভালো দাম পেলে বিক্রি করে দেব।

খামারি শফি বাংলানিউজকে বলেন, এবারের বাজারটি অন্য বছরের তুলনায় ভিন্ন। এবার মূল বাজারের চেয়ে ডিজিটাল বাজারকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন ক্রেতারা। তাই আমি ফেসবুকে আমার তিনটি গরুর বিজ্ঞাপন দিয়েছি। পাশাপাাশি জেলার ডিজিটাল বাজারেও থাকবে আমার গরু।

একই কথা জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার আমলার খামারি আরিফুলও। তিনি এবারে নিজের পালন একটি ষাঁড় বিক্রির জন্য ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। নিজের নামে খোলা ফেসবুকে তার গরুটির দাম চাওয়া হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, গরুটিকে ঘাস, খড়, চালের কুঁড়া খাইয়ে বড় করেছি। বাজার ভালো হলে দাম ভালো পাব।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ডিজিটাল গরুর হাট উদ্বোধন করা হয়েছে ১১ জুলাই। এখান থেকে কেবল গরু কেনাই নয়, স্বাস্থ্যসম্মতভাবে জবাই করে বাসায়ও পৌঁছে দেওয়া হবে। এছাড়া যারা অনলাইন মাধ্যম থেকে গরু কিনবেন, তাদের হাসিল দিতে হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২০
ইএআর/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।