ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সিটি ব্যাংকের সহায়তায় ঋণ পাচ্ছেন বিকাশের গ্রাহকরা

বিজনেস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০২ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২০
সিটি ব্যাংকের সহায়তায় ঋণ পাচ্ছেন বিকাশের গ্রাহকরা

ঢাকা: জরুরি অর্থের প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে সিটি ব্যাংকে জামানতবিহীন ডিজিটাল ঋণ মিলবে বিকাশে। দেশে প্রথমবারের মতো কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক, যে কোনো সময় যে কোনো স্থান থেকে মোবাইল ওয়ালেটের মাধ্যমে সঙ্গেই সঙ্গেই ঋণ বিতরণ সেবা চালু করল।

প্রাথমিকভাবে একটি পাইলট প্রকল্পের আওতায়, সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত সিটি ব্যাংকের এ ডিজিটাল ঋণ গ্রহণের সুযোগ পাবেন নির্বাচিত সীমিত সংখ্যক বিকাশ অ্যাপ গ্রাহক। আর্থিক অন্তর্ভুক্তির কার্যকর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে, ব্যাংক ঋণকে প্রযুক্তির সহায়তায় আরও জনমুখী করতেই এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পের সফল সমাপ্তি শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে, ঋণ পাওয়ার উপযুক্ত বিকাশ গ্রাহকদের জন্য এ সেবা আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করবে সিটি ব্যাংক।

ঋণ নেওয়ার পর তিন মাসে, সম-পরিমাণ তিন কিস্তিতে নির্ধারিত তারিখে গ্রাহকের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিশোধিত হয়ে যাবে। নির্ধারিত পরিশোধ-তারিখের আগে গ্রাহক এসএমএস এবং অ্যাপ-এর মাধ্যমে এ সংক্রান্ত নোটিফিকেশন পাবেন।  

বিভিন্ন সময় অর্থের জরুরি প্রয়োজন মেটাতে এখনও অনানুষ্ঠানিক খাত থেকে উচ্চ সুদে কঠিন শর্তে ঋণ নিতে বাধ্য হন সমাজের নানা স্তরের মানুষ। অনেক ক্ষেত্রেই টাকা যোগাড় করতে না পেরে আরও বড় কোনো ঝামেলায় পড়ে যান তারা। তাছাড়াও, আরও অনেক কারণেই ঋণের দরকার পড়ে তাদের। সিটি ব্যাংকের এ ডিজিটাল ঋণ এমন প্রয়োজনগুলো মিটিয়েই প্রান্তিক মানুষ, ব্যবসায়ী, পেশাজীবীসহ সব শ্রেণির গ্রাহকের জীবনমান উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
 
পাইলট প্রকল্পে ঋণ পাবার জন্য নির্বাচিত গ্রাহকরা তাদের বিকাশ অ্যাপে ঋণ বা লোন আইকনটি দেখতে পাবেন। ঋণ নিতে গ্রাহককে তার ই-কেওয়াইসি ফরমে (নো-ইয়োর কাস্টমার ফর্ম)  বিকাশে দেওয়া তথ্য সিটি ব্যাংককে দেওয়ার সম্মতি দিতে হবে। পরবর্তীতে ঋণের পরিমাণ এবং নিজের পিন দিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই বিকাশ অ্যাকাউন্টে ঋণের টাকা পেয়ে যাবেন। বাংলাদেশে ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী এ ঋণের সঙ্গে প্রযোজ্য সুদ ও অন্যান্য বিধিবিধান প্রতিপালিত হবে।

চীন, ইন্ডিয়া, ফিলিপাইনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের ঋণ প্রকল্পে এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্রেডিট অ্যাসেসমেন্ট সুবিধা দেয় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আলিবাবা গ্রুপের অ্যাফিলিয়েট ‘অ্যান্ট ফিনান্সিয়াল’। এ প্রকল্পেও গ্রাহকদের ক্রেডিট অ্যাসেসমেন্ট করবে এ বিশ্বখ্যাত ফিনটেক প্রতিষ্ঠানটি।

উল্লেখ্য, সিটি ব্যাংকের এ ডিজিটাল ঋণ গ্রহণকারীরা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করছেন কিনা, তা মূল্যায়িত হবে। পরবর্তীতে যে কোন ধরনের ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রেই এ মূল্যায়ন বিবেচিত হবে। কোনো গ্রাহক ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে বিধিবিধান অনুসরণে সিটি ব্যাংক ঋণ খেলাপির তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে  অবহিত করবে।  

প্রকল্পটির বিষয়ে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন বলেন, আমরা সবসময়ই গ্রাহকের প্রয়োজনে আরও কাছে থাকার চেষ্টা করি। আমাদের দেশে অনেকেরই, বিশেষত: ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের হঠাৎ-ই অর্থের প্রয়োজন হয়। সেটি কীভাবে আরও সহজে তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় এবং তারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে সেই অর্থ ব্যবহার করতে পারেন, সেটি মাথায় রেখেই এ ডিজিটাল ঋণের যাত্রা। আমাদের এ পাইলট প্রকল্পটি নিরীক্ষামূলক, এ প্রকল্পে অর্জিত অভিজ্ঞতা নিয়ে ক্রমোন্নয়নের মাধ্যমে গ্রাহকের জন্য আরও ভালো সেবা নিয়ে আসতে পারবো বলেই আমাদের আশা।  

উদ্যোগটি সম্পর্কে বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর বলেন, প্রান্তিকসহ সব শ্রেণির মানুষের জীবনের মানোন্নয়ন এবং আর্থিক অর্ন্তভুক্তিতে আরও জোরালো ভূমিকা রাখতে বিকাশের মতো কার্যকর ডিজিটাল আর্থিক প্ল্যাটফর্ম ও বিশাল গ্রাহক ভিত্তিকে ব্যবহার করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সৃজনশীল নতুন নতুন সেবা প্রচলন করতে পারে। সিটি ব্যাংকের এ ডিজিটাল ঋণ প্রকল্প তারই একটি উদাহরণ। জরুরি মুহূর্তে তাৎক্ষণিক জামানতবিহীন এ ঋণ প্রান্তিক মানুষ, তরুণ সমাজ, প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের জন্য আর্শীবাদ হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০২০
আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।