ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

করোনা কাটিয়ে ওঠার উপযোগী মুদ্রানীতি দাবি

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২০
করোনা কাটিয়ে ওঠার উপযোগী মুদ্রানীতি দাবি

ঢাকা: মানুষের হাতে নগদ অর্থের যোগান বাড়াতে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশ্লেষকরা বলছেন এজন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে কর্মসংস্থানকে।

অর্থের চাহিদা মেটাতে হবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের। আর পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংকাররা দাবি জানিয়েছেন ঋণ ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা অথবা গ্যারান্টি স্কিম চালু।

বাজারে নগদ অর্থের যোগান কেমন থাকবে, কতটা বেশি ঋণ দেওয়া হবে উদ্যোক্তাদের, সরকারই বা কত টাকা ধার করতে পারবে ব্যাংকিং খাত থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংক এমন সব লক্ষ্যই নির্ধারণ করে মুদ্রানীতিতে।

বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরের এই রূপরেখায় বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। যদিও মে মাসে শেষে হয়েছে মাত্র ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। অপরদিকে লক্ষ্যের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ঋণ নিয়েছে সরকার।

করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) ধাক্কা সামলাতে নতুন অর্থবছরে এই অবস্থার পরিবর্তন চান ব্যবসায়ীরা।

ঢাকা চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। মূলধন সংকটে চালু হচ্ছে না এসব প্রতিষ্ঠান। আমরা আশা করছি বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতিতে এসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে। এবং কঠোরভাবে তদারকি করে যাতে বেসরকারিখাত টাকা পায়।
এরই মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের এমন চাহিদা বিবেচনায় রেখে উদ্যোগ শুরু হয়েছে। করোনার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ছোট-বড় সব উদ্যোক্তার জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ এবং সুদ মুওকুফের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। যার আওতায় ৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ দেওয়া হবে। এর জন্য ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সরবরাহ বাড়াতে সিআরআর, এসএলআরসহ বেশ কিছু ছাড়ও দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সামনের দিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসব সুবিধা আরও প্রয়োজন হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, কর্মসংস্থান টিকিয়ে রাখার জন্য ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলো টিকিয়ে রাখা বেশি জরুরি। পুনঃঅর্থায়ন তহবিলে যে সুদের হারটা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেটা সব ধরনের ঋণের জন্য একই। আমার মনে হয় ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদের হার কমানো উচিত।

তবে প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নকারী ব্যাংকগুলো নিজেদের আয় নিয়েও উদ্বিগ্ন। ১ এপ্রিল থেকে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ বাস্তবায়ন ও করোনা ভাইরাসের কারণে ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা কমে গেছে সবারই।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণের সুদহারের সীমা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ব্যাংকাররা। দাবি করেছেন সব ধরনের ঋণের জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম চালু করার।

প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাহেল আহমেদ বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজের সর্ম্পূণ ক্রেডিটের গ্যারান্টি ব্যাংকগুলোর ঘাড়ে। এই সময়ে আমরা ক্রেডিট রিস্কটা কীভাবে ম্যানেজ করবো। আরেকটা বিষয় হচ্ছে ঋণের সুদহারটা পুনঃনির্ধারণ করার যে সুযোগ আছে বিবেচনা করার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতির মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে ও কমবে তার একটি পরিকল্পনা গভর্নর ফজলে কবির তুলে ধরবেন মুদ্রানীতির মাধ্যমে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২০
এসই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।