ঢাকা: চলমান করোনা ভাইরাসজনিত মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রাাকে সামনে রেখে আর্থিকখাতের সার্বিক ব্যবস্থাপনা নির্ধারণে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য সম্প্রসারণমুখী ও সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
২০২০-২১ অর্থবছরে বৈদেশিক লেনদেন খাতের সম্ভাব্য গতিধারা বিবেচনা করে ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহের অন্যতম উপাদান ব্যাংক ব্যবস্থার নিট বৈদেশিক সম্পদের প্রবৃদ্ধি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের (১০.২ শতাংশ) তুলনায় কম।
বুধবার (২৯ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে মুদ্রানীতির এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক আগে প্রতি ছয় মাসের আগাম মুদ্রানীতি ঘোষণা করলেও গত অর্থবছর থেকে তা এক বছরের জন্য করা হচ্ছে।
অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ, যার মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ ও ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ।
লিখিত বক্তব্যে গভর্নর বলেন, মহামারিতে বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং সরকারকর্তৃক নির্ধারিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় নতুন বিনিয়োগ জোরদারকরণে বেসরকারি খাতে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০২০-২১ অর্থবছরে প্রয়োজনীয় অর্থের সরবরাহ নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ইতোমধ্যে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ যেমন-সিআরআর ও রেপো সুবিধাহারে পরিবর্তন, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে সরকারি সিকিউরিটিজ কেনার ওপর গুরুত্ব আরোপ এবং বিভিন্ন নতুন পুনঃঅর্থায়নস্কিম চালুর পাশাপাশি ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম চালুকরণের মতো পদক্ষেপসমূহ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
এজন্য ব্যাংকগুলোর তহবিল খরচ কমানোর পাশাপাশি চাহিদানুযায়ী তারল্য সরবরাহ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ওভারনাইট ভিত্তিক রেপো সুদ হার বিদ্যমান ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট হ্রাস করে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ; সুদহার করিডর যৌক্তিকীকরণের উদ্দেশ্যে রিভার্স রেপো সুদহার বিদ্যমান ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৭৫ বেসিস পয়েন্ট হ্রাস করে ৪ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ এবং সম্প্রতি ঘোষিত সুদ হারযৌক্তিকীকরণ নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাংক রেট বর্তমানে বিদ্যমান ৫ শতাংশ হতে ১০০ বেসিস পয়েন্ট হ্রাস করে ৪ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ।
এসব পদক্ষেপ কার্যকর হলে ব্যাংকসমূহের ঋণ সক্ষমতা যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। তবে, এসব ঋণ যাতে উৎপাদনমুখী, কর্মসৃষ্টি সহায়ক ও পরিবেশবান্ধব হয় ব্যাংকসমূহকে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। অন্যথায়, মূল্যস্ফীতি এবং খেলাপি ঋণ বৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২০
এসই/এমজেএফ