বেনাপোল (যশোর): বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের রেলপথে আমদানি বাণিজ্য বাড়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। এতে যেমন লাভবান হবেন ব্যবসায়ীরা, তেমনি সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।
সোমবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় ভারত থেকে ২১টি বগিতে ৪৮০ মেট্রিক টন শুকনো মরিচ নিয়ে বেনাপোল রেলস্টেশনে এসে পৌঁছেছে একটি প্যার্সেল ভ্যান।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, মহামারি করোনা সংক্রমণের কারণ দেখিয়ে গত ২২ মার্চ রেল ও স্থলপথে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। হঠাৎ করে বাণিজ্য বন্ধের কারণে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় প্রায় ৫ হাজার পণ্যবোঝাই ট্রাক আটকা পড়ে। পরবর্তীতে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ব্যবসায়ীরা বিভিন্নভাবে ক্ষতির আকুতি জানালেও সচল হয়নি বাণিজ্য। একপর্যায়ে রেল কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস, বন্দর ও ব্যবসায়ীদের যৌথ উদ্যোগে বিকল্পভাবে বাণিজ্য সচলে রেলপথে ওয়াগানের পাশাপাশি পার্সেল ভ্যান ও সাইড ডোর কার্গো রেলে দুই দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি বাণিজ্যের চুক্তি হয়।
বর্তমানে বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে স্থলপথের পাশাপাশি রেল ওয়াগান, সাইড ডোর কার্গো রেল এবং পার্সেল ভ্যানে পাল্লা দিয়ে চলছে সব ধরনের পণ্যের আমদানি বাণিজ্য। এতে ব্যবসায়ীদের যেমন দুর্ভোগ কমেছে, তেমনি বাণিজ্যে গতি বাড়ায় সরকারেরও রাজস্ব আয় বেড়েছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বাংলানিউজকে বলেন, কিছু দিন আগে মহামারি করোনা সংক্রমণের কারণ দেখিয়ে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে মাসের পর মাস ট্রাক আটকে রেখে ফায়দা লুটছিল। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করেই শুরু হয় রেলপথে আমদানি বাণিজ্য। এতে যেমন ব্যবসায়ীরা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন, তেমনি সরকারেরও দু’দিক থেকে রাজস্ব আয় হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দরে রেলপথে আমদানিকারকরা জানান, স্থলপথে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে অবরোধ, হরতালসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় সময় মতো পণ্য পরিবহন করা সম্ভব হতো না। বর্তমানে রেলপথে সব ধরনের পণ্য আমদানি চালু হওয়ায় সময় মতো পণ্য পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছে। এবং এ আমদানি পণ্য বন্দর থেকে দিনের দিন খালাস হচ্ছে। এতে স্বস্তি ফিরেছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল বাংলানিউজকে বলেন, সম্প্রতি করোনার মধ্যে ভারত অংশের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে নানাভাবে বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছিল। এমন পরিস্থিতিতে বাণিজ্য সচল করতে রেলপথে সব ধরনের পণ্য আমদানি চালু করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আগে বেনাপোল বন্দরে শুধুমাএ রেল ওয়াগানে কয়েকটি পণ্য আমদানি হতো এবং সে সব পণ্য যশোরের নওয়াপাড়া গিয়ে খালাস করতে হতো। বর্তমানে রেল ওয়াগান, পার্সেল ভ্যান ও সাইড ডোর কার্গো রেলে সব ধরনের পণ্য আমদানি হচ্ছে এবং সেই পণ্য বেনাপোল বন্দরে খালাস করা হচ্ছে। এতে স্থলপথের পাশাপাশি রেলপথে পাল্লা দিয়ে পণ্য আমদানি হচ্ছে। এতে করে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারও লাভবান হচ্ছে।
বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সাইদুরজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আগে বেনাপোল রেলপথে ওয়াগানে মাসে ৫-৭ বার কয়েক ধরনের পণ্য আসতো। বর্তমানে এ রেলপথে প্রতিদিন ওয়াগন, সাইড ডোর কার্গো রেল ও প্যার্সেল ভ্যানের মাধ্যমে পণ্য বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হচ্ছে। এতে বন্দরের যেমন রাজস্ব আয় হচ্ছে, তেমনি রেলেরও বিপুল পরিমাণে রাজস্ব আহরণ হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৯
এসআরএস