শেরপুর: শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মালিঝি নদীর ওপর নির্মিত স্লুইস গেইটটি কাজে আসছে না কৃষকের। ফলে সরকারি উদ্যোগ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছে স্লুইস গেইটের সুবিধা বা সুফল থেকে।
হাতিবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও কৃষকদের সেচ সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড এ স্লুইস গেইটটি নির্মাণ করে। মালিঝি নদীর ঘাগড়া নয়াপাড়ায় প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে একটি স্লুইস গেইট নির্মাণ করা হয়। এ সময় সেটির পাশে প্রায় ৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়।
হাতিবান্ধা গ্রামের কৃষক আবুল হাসেম, কামারপাড়া গ্রামের রেজাউল, আফছর আলী, মোক্তার হোসেন ভোট্টুসহ গ্রামবাসীরা জানায়, ওই স্লুইস গেইটটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি ভবনও নির্মাণ করা হয়। এ ভবনে একজন কর্মচারীকেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্লুইস গেইটটি নির্মাণের এক বছর যেতে না যেতেই পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে তা বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। এরপর স্লুইস গেইটটি আর সংস্কার করা হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োগ করা ওই কর্মচারী কিছুদিন এখানে অবস্থানের পর তিনিও চলে যান বলে জানা যায়। এরপর থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত স্লুইস গেইট ভবনসহ অধিগ্রহণ থহর জমিগুলো বেদখল হতে শুরু করে। এখন তা অন্যের দখলে রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিধ্বস্ত স্লুইস গেইটটিও আর পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে যে উদ্দেশ্য নিয়ে স্লুইস গেইটটি নির্মাণ করা হয়েছিল তা আর বাস্তবায়িত হয়নি।
ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন দোলা ও স্থানীয় কৃষকরা বাংলানিউককে জানান, ওই স্লুইস গেইটটি সংস্কার বা এখানে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হলে কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ লাঘবের পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে।
তিনি আরও বলেন, বিধ্বস্ত স্লুইস গেইটটি সংস্কার অথবা এখানে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণের দাবি এলাকার কৃষকদের দীর্ঘদিনের।
উপজেলা চেয়ারম্যান এসএমএ ওয়ারেজ নাইম বাংলানিউজকে বলেন, এখানে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণের বিষয়ে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে আলোচনাও করা হয়েছে। কিন্তু আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে বলেন, আগের নির্মিত স্লুইস গেইটটি অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করায় তা বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে, পরিকল্পিতভাবে ওই স্থানে রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হলে কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধিত হবে।
তিনি আরও বলেন, এক ও দোফসলি জমিগুলো অধিক জমিতে পরিণত হবে। এতে প্রায় ২ হাজার কৃষক ৫শ হেক্টর জমি অধিক ফলনশীল জমিতে পরিণত হবে।
শেরপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মো. শাহজাহান বাংলানিউজকে বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২০
এএটি