ঢাকা: বরেন্দ্র এলাকার আট জেলা বাদে দেশের ৫৬ জেলায় পুকুর ও খাল পুনঃখনন করতে ১ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। ব্যবহারের উপযোগী করার পাশাপাশি পুকুর-খালে পানির ধারণক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে ভূ-উপরিস্থ পানির মজুদ বাড়ানো, শুকনো মৌসুমে পানির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতেই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) এ প্রকল্প।
এক হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পুকুর ও খাল পুনঃখনন প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায় তিন বছর আগে। কিন্তু প্রকল্পটি হাতে নেওয়ার আগে কোনো সমীক্ষা না করায় এর অগ্রগতি হতাশাজনক। তিন বছরে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার খাল ও ছয় একর পুকুর পুনঃখনন করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে না পারায় এখন প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে ৪২৩ কোটি টাকা। মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে ২০২৪ সাল পর্যন্ত।
মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) একনেক সভায় এটিসহ মোট ছয় প্রকল্প একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। গণভবন থেকে একনেক সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান উপস্থিত থাকবেন। অন্যদিকে শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-সচিবরা উপস্থিত থাকবে।
পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) জাকির হোসেন আকন্দ বাংলানিউজকে বলেন, সারাদেশে পুকুর, খাল উন্নয়ন’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় পৌর এলাকার খাল, পুকুর, দিঘির পাড়ে ওয়ার্কওয়ে, সিটিং, পার্কিং ব্যবস্থাসহ অন্য সুবিধাদি অর্থাৎ, সৌন্দর্যবর্ধন কার্যক্রম নতুনভাবে যোগ করা হয়েছে।
সিলেট থেকে তামাবিল স্থলবন্দরের সংযোগ সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৬৫ দশমিক ৩০ কিলোমিটার। এই সড়ক দিয়ে ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণে পাথর ও কয়লা আমদানি করা হয়। সড়ক দিয়ে চলে ভারী যানবাহন। তবে দীর্ঘদিন থেকে সড়কটির অবস্থা বেহাল। ২০০০ সালে কুয়েত সরকারের অর্থায়নে সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক সংস্কার করা হয়। দীর্ঘদিন পরে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ফোরলেনে রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ)। এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) এই সড়ক উন্নয়নে অর্থায়ন করবে।
৬৫ দশমিক ৩০ কিলোমিটার সড়কে মোট প্রস্তাবিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৬১৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেসমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) ঋণ থেকে দুই হাজার ৯৭০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। ফোরলেনের উভয়পাশে ধীরগতির যানবাহন চলাচলে লেন থাকবে। এছাড়া পথচারীদের জন্য আলাদা লেন থাকবে উভয়পাশে। এটা এশিয়ান হাইওয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করছে সরকার।
‘সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক আলাদা লেনসহ ফোরলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ফোরলেনের এই সড়কটিতে ৩৩২ মিটার দৈর্ঘ্যের ২৩ কালভার্ট, এল টাইপ সসার ড্রেন, ভি টাইপ সসার ড্রেন নির্মাণ করা হবে। ১১৯ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি রেলওভার পাস, প্রয়োজন অনুসারে আটটি আন্ডারপাস ও তিনটি ওভারপাস থাকবে। থাকবে আরো অনেক সুবিধা।
এছাড়া মতলব-মেঘনা-ধানাগোদা-বেড়িবাঁধ সড়ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। এছাড়া একনেক সভায় আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার, ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্যচাষ প্রযুক্তি সম্প্রসারণ ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ এলাকার নিষ্কাশন প্রকল্পও একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২০
এমআইএস/এএ