ঢাকা: প্রথমবারের মতো স্পট মার্কেট তথা খোলাবাজার থেকে প্রায় ৩৫ লাখ এমএমবিটিই এলএনজি আমদানির একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। ফলে সাশ্রয়ীমূল্যে এলএনজি আমদানি সম্ভব হবে বলে মনে করছে সরকার।
বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) জুম অ্যাপসের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ২১তম সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বৈঠকে মোট ১০টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এসব ক্রয় প্রস্তাবের মোট অর্থের পরিমাণ এক হাজার ৭৯৫ কোটি ১৬ লাখ ১২ হাজার ২২ টাকা। এ টাকার মধ্যে বিভিন্ন দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণ হিসেবে ১ হাজার ১৬৪ কোটি ৪৭ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩৭ টাকা নেওয়া হবে। এর মধ্যে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের আওতায় পেট্রোবাংলাকে সিঙ্গাপুরের ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ৩৪ লাখ ৯০ হাজার ২০০ এমএমবিটিই এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে খরচ হবে ১৩২ কোটি ৯৩ লাখ ৪০ হাজার ৯৭৮ টাকা।
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা এবারই প্রথম স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনছি। এর আগে আমরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লংটার্ম চুক্তির মাধ্যমে কিনতাম। কিন্তু এবারই প্রথম স্পট মার্কেটে গেলাম। এটা নতুন একটা উইন্ডো আমাদের জন্য খোলা হলো। আমি মনে করি এখান থেকে সব সময় কম্পিটিটিভ প্রাইসে (প্রতিযোগীতামীলক মূল্য) এলএনজি কিনতে পারবো।
বৈঠকে অনুমোদিত অন্য প্রস্তাবগুলো হলো: পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে কনটেক কন্সট্রাকশন লিমিটেড থেকে ১ লাখ ১৯ হাজার ২১২টি এসপিসি পোল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন। এতে মোট ব্যয় হবে ১৫৯ কোটি ৮৯ লাখ ৮১ হাজার ৬১৮ টাকা। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে।
শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের জন্য ১৩ হাজার ৫৭০ কিমি কনডাকটর বা এএসডিআর বেয়ার মেঘনা স্টার কেবল অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপলায়েন্সের কাছ থেকে কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এতে ব্যয় হবে ৭৯ কোটি ১৭ লাখ ৬৬ হাজার ১৪০ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য বহুতল বিশিষ্ট ভবন ও অন্য স্থাপনা নির্মাণের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালট্যান্টস লিমিটেডের চুক্তির মেয়াদ ২০২২ এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৪ মাস বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন। এতে ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত খরচ হবে ৬ কোটি ২৩ লাখ ৭০ হাজার ৩৩৫ টাকা। মেয়াদ বৃদ্ধিতে মোট ব্যয় হবে ১৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
এছাড়া বৈঠকে মোংলা বন্দর চ্যানেলের আউটারবার প্রকল্প এলাকায় প্রায় ৪১ দশমিক ৯৫ লাখ ঘনমিটার অতিরিক্ত ড্রেজিং করার জন্য হংকং রিভার ইঞ্জিনিয়িারিং এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন করপোরেশনের সঙ্গে সংশোধিত চুক্তি সম্পাদনের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ব্যয় হবে ৮৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। এ নিয়ে মোট খরচ ৬৮০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০২০
জিসিজি/এএ