ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিনিয়োগ বাড়াতে বৈঠকের প্রস্তাব সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২০
বিনিয়োগ বাড়াতে বৈঠকের প্রস্তাব সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড

ঢাকা: বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে উভয় দেশের মধ্যে একটি বৈঠক করার প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড।

এতে করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্র চিহ্নিত করা সহজ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একই সঙ্গে উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে।

রোববার (০৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন নাথালি চুয়ার্ড।

সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত বলেন, সুইজারল্যান্ড বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দেয়। বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে সুইজারল্যান্ড প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে এবং বাণিজ্য সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। ফার্মাসিউটিক্যাল এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রচুর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

করোনা মোকাবিলা এবং করোনাকালে রপ্তানি বাণিজ্য অব্যাহত রাখার প্রশংসা করে তিনি বলেন, বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদার। উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রচুর সুযোগ রয়েছে, এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে, এগুলোর প্রায় অর্ধেকের কাজ সমাপ্তির পথে। এগুলোতে জাপান, ভারত, চীন, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশ বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে এগিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের জন্য ট্যাক্সসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। বাংলাদেশ সুইজারলান্ডের জন্য লাভজনক বিনিয়োগ স্থল হতে পারে। সুইজারল্যান্ডের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী দল বাংলাদেশ সফর করলে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে।

টিপু মুনশি বলেন, পরিবর্তনশীল বিশ্ববাণিজ্য পরিস্থিতিতে চীন থেকে আমেরিকা, জাপানসহ অনেক দেশ তাদের শিল্পকলকারখানা রিলোকেশনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। দেশগুলো বাংলাদেশকে এখন বিনিয়োগের উপযুক্ত স্থান মনে করছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগের আনুষ্ঠানিকতা সহজ ও দ্রুত করার পদক্ষেপ নিয়েছে। অতিসহজেই বাণিজ্য করার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। বিনিয়োগের জন্য এখন বাংলাদেশ উপযুক্ত স্থান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৩ ভাগ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। সরকার রপ্তানি খাতের পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি করতে কৃষিজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যাল, চামড়াজাত পণ্য, আইসিটি, পাটজাত পণ্য সেক্টরকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। বাংলাদেশের প্রচুর দক্ষ জনশক্তি রয়েছে। এছাড়া, সেবা খাতেও বাংলাদেশের প্রচুর দক্ষ জনশক্তি রয়েছে। সুইজারল্যান্ড চাইলে তা ব্যবহার করতে পারে।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, জাপানের বিখ্যাত মিটশুবিসি এবং ভারতের টাটা কোম্পানি বাংলাদেশে গাড়ি তৈরি কারখানা স্থাপনের চিন্তা করছে। ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই) আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ কোম্পানি আইন সময়োপযোগী করাসহ ব্যবসা সহজীকরণের অন্যান্য সূচকেও প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করেছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে সুইজারল্যান্ডে রপ্তানি করেছে ১০৬ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করেছে ২৭০ দশমিক ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১০৬ দশমিক ৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং জুলাই-মার্চ সময়ে আমদানি করেছে ২৪৫ দশমিক ১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। আগামী নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের সাথে সুইজারল্যান্ডের  বাণিজ্য বৃদ্ধি ও বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠানে একমত পোষণ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২০ 
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।