ঢাকা: বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে কানাডার ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। কানাডার সাস্কাচুয়ান প্রদেশের সাস্কাটুন শহরে আয়োজিত এক সেমিনারে এ আহ্বান জানানো হয়।
কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায়, গত মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ‘বাংলাদেশ: বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের গন্তব্য’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ হাইকমিশন, সাস্কাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউসাস্ক) গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটি এবং অ্যাগ্রি-ওয়েস্ট বায়ো ইনক-এর যৌথ উদ্যোগে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান, সাস্কাটুন পশ্চিমের সংসদ সদস্য ব্র্যাড রেডিকপ, সিটি অব সাস্কাটুনের মেয়র চার্লি ক্লার্ক, কানাডা ও বাংলাদেশের কৃষি, খাদ্য, শিল্প, গবেষণা ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা সেমিনারে যোগ দেন।
সেমিনারটি দুই সেগমেন্টে বিভক্ত ছিল। প্রথম সেগমেন্টের আলোচনায় বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান, বিএআরসি’র কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান এস এম বখতিয়ার বাংলাদেশের প্যানেল সদস্য হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
প্রথম সেগমেন্টে হাইকমিশনার বাংলাদেশকে উদীয়মান বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে তুলে ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের বিস্তৃত আন্তঃসংযোগ, ক্রমবর্ধমান রপ্তানি, শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদা, অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো সম্প্রসারণ এবং দক্ষ কর্মশক্তির বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ হাইকমিশন এর আগে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্কের জন্য ক্যালগারি, ব্রিটিশ কলম্বিয়া, টরন্টো, উইন্ডসর সহ কানাডার অন্যান্য শহরে সেমিনারের আয়োজন করেছে বলে জানান হাইকমিশনার।
সেমিনারে বাংলাদেশের মূল অর্থনৈতিক ক্ষেত্রগুলিকে তুলে ধরা হয়েছিল যার মধ্যে রয়েছে জৈব-প্রযুক্তি, কৃষি উৎপাদন, কৃষি-খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, খামার সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি, ফার্মাসিউটিক্যালস, তথ্য-প্রযুক্তি এবং সক্ষমতা বিকাশের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের অবারিত সুযোগ রয়েছে বলে অন্যান্য বক্তারা মনে করেন।
প্রথম সেগমেন্টের আলোচনায় বাংলাদেশের উপরোল্লিখিত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের, বিভাগের ও প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিরা বাংলাদেশের ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অবারিত সুযোগের বিষয়ে কানাডার ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
জিআইএফএস’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিভেন ওয়েব তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের সাথে আমাদের টেকসই খাদ্য সুরক্ষা অংশীদারিত্ব এবং বাংলাদেশ, সাস্কাচুয়ান এবং কানাডার মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্ককে আরো উন্নত করার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
সেমিনারে দ্বিতীয় সেগমেন্টে অংশ নেন, সাস্কাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. স্টুয়ার্ট স্মিথ, সাস্কাটুন ওয়েস্ট এর এমপি ব্র্যাড রেডিকপ, বোর্ড চেয়ার আল্লানা কোচ, জিআইএফএস প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিভেন ওয়েব সহ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার (রাজনৈতিক) ও দূতালয় প্রধান মিয়া মো. মাইনুল কবির এবং কাউন্সেলর (বাণিজ্যিক) মো. শাকিল মাহামুদ।
বক্তারা সাস্কাচুয়ান ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও প্রযুক্তির বহুমুখী সম্ভাবনার ওপর জোর দেন। সেমিনারে শীর্ষস্থানীয় কানাডিয়ান শিল্পের অনেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এবং মিডিয়া প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
যৌথ গবেষণা সহযোগিতা ও খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে ২০২০ সালে বাংলাদেশ ও জিআইএফএস-এর মধ্যে অব্যাহত যৌথ বহুমুখী গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিক কার্যক্রমের ফলশ্রুতিতে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। কৃষি, খাদ্য ও জৈব-প্রযুক্তি বিষয়ে সাস্কাচুয়ানের অর্জিত বিশেষ উন্নত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের কৃষকের আয় বৃদ্ধি, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা, এসডিজি’র লক্ষ্য অর্জনসহ ক্ষুধামুক্ত ও নারীর ক্ষমতায়নকে জোরদার করাই এই যৌথ সহযোগিতার মূল উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২০
টিআর/এমজেএফ