ঢাকা: ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সব খাতের উৎপাদনশীলতা বর্তমান ৩ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত করা হবে। এজন্য সেক্টরভিত্তিক উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে বিভিন্ন খাতের চাহিদা নিরুপণ করা হবে এবং চাহিদার আলোকে অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হবে।
রোববার (১৮ অক্টোবর) অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমে অনুষ্ঠিত জাতীয় উৎপাদনশীলতা পরিষদের (এনপিসি) ১৫তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে সভায় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার সহ-সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় নবম-দশম শ্রেণির আত্মকর্মসংস্থান ও ব্যবসায় উদ্যোগ পাঠ্যপুস্তকে 'উৎপাদনশীলতার ধারণা ও আধুনিকায়ন' অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে পাণ্ডুলিপি প্রকাশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এছাড়া এনপিও'র চলমান কার্যক্রমের পাশাপাশি কৃষি, সেবা ও শিল্প সেক্টরের উৎপাদনশীলতার লেভেল নির্ধারণের লক্ষ্যে লেবার ফোর্স সার্ভে দ্রুত সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে অনুরোধ জানানো হয়। সভায় উৎপাদনশীলতা আন্দোলনকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশনে 'উৎপাদনশীলতা উন্নয়ন কলা-কৌশল' বিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কৃষি, শিল্পসহ সব খাতে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে শিল্প মন্ত্রণালয় ২০৩০ সাল নাগাদ জাতীয় পর্যায়ে উৎপাদনশীলতা ৫ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এক্ষেত্রে শিল্প মন্ত্রণালয় অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাসহ সরকারের অন্য উন্নয়ন দলিল বিবেচনা করে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর কৌশল হাতে নিয়েছে। বিশ্বায়নের বর্তমান প্রেক্ষাপটে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো সময়ের অনিবার্য দাবি বলে তিনি মন্তব্য করেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, কৃষিখাতে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম অগ্রাধিকার। দেশের প্রতি ইঞ্চি আবাদি জমিকে কৃষি উৎপাদনের আওতায় আনতে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন। পাশাপাশি শিল্পখাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো হবে। উৎপাদনশীলতা বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট সবার অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করে ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি মাস্টার প্ল্যানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হলে শ্রমিকদের প্রতি আরও মনোযোগ দিতে হবে। তাদের জন্য কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। তাদের কর্মপরিবেশ উন্নত করতে হবে।
তিনি বলেন, শিল্পপণ্যের গুণগতমান উন্নীত করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশীয় পণ্যের সম্প্রসারণ করতে হবে। শিল্প প্রতিমন্ত্রী সরকারি-বেসরকারি খাতে পরিচালিত সব কারখানায় আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন যন্ত্রপাতি স্থাপন করে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন।
শিল্প সচিব কে এম আলী আজম জানান, ২০৩১ সালের উৎপাদনশীলতার লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৬ শতাংশ অর্জনে স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
সভায় বিদ্যুৎ সচিব ড. সুলতান আহমেদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব কে এম আব্দুস সালাম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. লুৎফুল হাসান, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম, পরিকল্পনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মোশাররফ হোসেন, বেপজার জিএম তানভীর হোসেন, এফবিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, ইউএমসিএইচের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২০
জিসিজি/আরবি/