খুলনা: খুলনার প্লাটিনাম জুট মিলস লিমিটেডের অবসরপ্রাপ্ত ও অবসায়নকৃত (গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুবিধাসহ) শ্রমিকদের চূড়ান্ত পাওনার চেক এবং সঞ্চয়পত্র দেওয়া শুরু হয়েছে।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে খালিশপুর প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলস অফিসার্স ক্লাব চত্বরে এ চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
এসময় তিনি বলেন, পাটের ঐতিহ্য ধরে রাখতে ব্যক্তিখাতের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় মালিকানার পাটকল থাকা দরকার। বিজেএমসির নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের কেবল উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে। জিটুজি, পিপিপি অথবা লিজিংয়ের প্রক্রিয়ায় নতুন করে মিলগুলো চালু করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের সম্পদ রক্ষা ও মানুষের প্রতি ভালোবাসার জন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তার ওয়াদা অনুযায়ী ভারী শিল্প, ব্যাংক-বিমা খাতকে স্বাধীনতার পরে জাতীয়করণ করেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে বিরাষ্ট্রীয়করণ কূটকৌশলের আওতায় পাটকলগুলো অলাভজনক দেখিয়ে ব্যক্তিখাতে দেওয়া অথবা বন্ধ করা হয়েছে। শেখ হাসিনা পুনরায় মিলগুলো চালু করেন।
‘মিলের খারাপ অবস্থার জন্য শ্রমিকরা দায়ী নয়। কর্মকর্তারা ভেজা পাট কেনেন, শ্রমিকরা নয়। কোটি কোটি টাকার অবিক্রিত পাটপণ্য বিক্রির দায়িত্ব কর্মকর্তাদের। প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলের অবসরপ্রাপ্ত এবং অবসায়নকৃত শ্রমিকদের পাওনা টাকা শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে যাবে। কোনো নেতা বা দালাল এ টাকা নিয়ে শ্রমিকদের ঠকাতে পারবে না। শ্রমিকের ন্যায্য পাওনার চেয়ে ১৩ থেকে ২৭ শতাংশ টাকা তাদের বেশি দেওয়া হয়েছে। ’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
অতিথি ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) সুবাস চন্দ্র সাহা, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড. খ. মহিদ উদ্দিন, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঞা, র্যাব-৬ এর পরিচালক লে. কর্নেল রওশনুল ফিরোজ, বিজেএমসির সচিব এএফএম এহতেশামুল হক, খুলনার পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, শিল্প পুলিশ-৬ এর পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম এবং খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা জানান বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পাট) মো. আবু বকর সিদ্দিক। খুলনা শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। এসময় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, শ্রমিক নেতা, সুবিধাভোগী ও সাধারণ শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রতিমন্ত্রী প্লাটিনাম জুবলি জুট মিলস লিমিটেডের অবসরপ্রাপ্ত ও অবসায়নকৃত (গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুভিধাসহ) ৪৫ জন শ্রমিকের মধ্যে চেক ও সঞ্চয়পত্র হস্তান্তর করেন। হস্তান্তর করা টাকাসহ অবশিষ্ট শ্রমিকদের পাওনা দুশ ষোল কোটি ২৮ লাখ ছয় হাজার ২৪ টাকা শ্রমিকদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ও দুশ ১৪ কোটি ৮৪ লাখ ৪২ হাজার ছয়শ ৭১ টাকা তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২০
এমআরএম/এএ