ঢাকা: ‘এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের সময় বাড়ানো হয়েছে আরও তিন বছর। একইসঙ্গে প্রকল্প ব্যয় ৪ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে।
২০১৬ সালে নেওয়া এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১১ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। ব্যয় বাড়ানোর ফলে এখন তা হলো ১৬ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) একনেক সভায় এটিসহ ৩ প্রকল্পে মোট ৫১৮৯ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
গণভবন থেকে একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। অন্যদিকে শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম প্রকল্পের সার্বিক বিষয় উপস্থাপন করেন।
উত্তরবঙ্গে শিল্প কারখানার প্রসারসহ ভারত-নেপালের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য উন্নয়নে চার লেন হচ্ছে এলেঙ্গা থেকে রংপুর মহাসড়ক। রংপুর মহাসড়ক থেকে বুড়িমারি ও বাংলাবান্ধা হয়ে ভারত-নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে মহাসড়কটি।
এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। চার বছর পার হলেও প্রকল্পের আর্থিক ও ভৌত অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। ২০২১ সালের আগস্টে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া কথা ছিল।
বর্ষা মৌসুম, কোভিড-১৯ ও জমি অধিগ্রহণ বিলম্বিত হওয়ায় কাজের অগ্রগতি কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পটি টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা ও রংপুর জেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
এখনো সড়ক ও সেতুগুলোর সার্ভে ও ডিজাইন কাজ চূড়ান্ত হয়নি। মাঠ পর্যায়ের পূর্তকাজের তদারকি কাজ চলমান। ৭টি নির্মাণ প্যাকেজের আওতায় সড়ক ও সেতুসমূহের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে সবেমাত্র। প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৪৬১ মিটার দৈর্ঘ্যের ২৬টি সেতু, ৪১১ মিটারের একটা রেলওয়ে ওভারপাস ও ১১টি স্টিল ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। এলেঙ্গায় ১ হাজার ৫৩৮ মিটার, কড্ডার মোড়ে ৩৯৬ মিটার ও গোবিন্দগঞ্জে একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। এছাড়া সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু ইপিজেড ও গোবিন্দগঞ্জ পলাশবাড়ী এলাকায় নতুন করে দুটি ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ যোগ হয়েছে।
ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে এশিয়ান হাইওয়ে সাউথ এশিয়া সাব রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) ও বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক করিডোরে (বিসিআইএম) নতুন করে বাংলাদেশের ৮টি মহাসড়ক যুক্ত হতে যাচ্ছে। এই সড়কগুলোর মোট দৈর্ঘ্য হবে ৬০০ কিলোমিটার। ১৯০ কিলোমিটার সড়কটি এর একটি অংশ। এই সড়কের মাধ্যমে রংপুর-সৈয়দপুর-বাংলাবান্ধা হয়ে ভারতে প্রবেশ করা যাবে। ভুটান ও নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য প্রসারে এই করিডোরটি অন্যতম অবদান রাখবে। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্য সহজ করতেও রুটটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রকল্পের আওতায় রুটের উভয়পাশে স্লো মুভিং ভেহিক্যাল ট্রাফিক (এসএমভিটি) লেন নির্মাণ করা হবে। ১৯০ কিলোমিটার রুটের যেখানে যানজট বেশি এমন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য হবে ২ হাজার ৬৩৫ মিটার।
একনেক সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্প দুটি হলো, ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সোনাপুর (নোয়াখালী)-সোনাগাজী (ফেনী) জোয়ারগঞ্জ (চট্টগ্রাম) সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্প ও ৩১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকার ট্রাফিক অবকাঠামো উন্নয়নসহ সড়ক নিরাপত্তা’ প্রকল্প।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০২০
এমআইএস/এএ