রাজশাহী: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ঝলমলিয়া হাটের আম, আলু, পেঁয়াজ, ভুট্টা, ডালসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যেরও আড়ত আছে। এসব আড়তে চাষিরা তাদের পণ্য বিক্রি করতে গেলে এক মণ কৃষিপণ্যের ওজন ধরা হতো ৪২-৪৬ কেজি।
সম্প্রতি স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা এ প্রথা বাতিল করেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে মালামাল ক্রয় বন্ধ রাখায় বাধ্য হয়ে ফের এ প্রথা বহাল রাখতে হয়েছে।
কৃষকদের অভিযোগ, তাদের প্রতিমণে ২-৫ কেজি ‘ঢলন’ দিতে হয়। এছাড়া হাটে কয়েক ধাপের কমিশনসহ নানা অনিয়মে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঝলমলিয়া হাটে ৪০ কেজিতে মণ নির্ধারণে সম্প্রতি স্থানীয় কৃষক-ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের বৈঠক হয়।
সভায় সর্বসম্মতিতে ‘ঢলন’ প্রথা বিলুপ্ত করে ৪০ কেজিতে এক মণ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ঝলমলিয়া হাটে ‘ঢলন’ না দেওয়ায় মালামাল কেনা বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা। এর প্রতিবাদে গুড় বিক্রেতারা (উৎপাদনকারী) মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে তাদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বৈঠকে বসেন। আলোচনায় মণে এক কেজি ‘ঢলন’ দেওয়ার মাধ্যমে কেনা-বেচা করতে সিদ্ধান্ত হয়।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, ঝলমলিয়া হাটের কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে মালামাল বিক্রি করতে এসে প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। ব্যবসায়ীদের এই ফাঁদ থেকে তাদের মুক্তির দাবি ছিলো দীর্ঘদিনের। কৃষকদের এই দাবি বাস্তবায়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসন এগিয়ে এলেও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে ঢলন প্রথা বাতিল করা সম্ভব হচ্ছে না।
ঝলমলিয়া হাটে আসা জিউপাড়া এলাকার জোবায়ের হোসেন নামে একজন খেজুর গুড় বিক্রেতা বলেন, হাটের ব্যবসায়ীরা চারদিক থেকে আমাদের লুটে খাচ্ছেন। তারা প্রতিমণে এককেজি ‘ঢলনের’ কথা বলে দেড় থেকে দুই কেজি হারে নিচ্ছেন।
গুড় ব্যবসায়ী মো. সলিমুল্লাহ বলেন, বিক্রেতারা গত হাটে প্রতিমণে ‘ঢলন’ না দেওয়া গুড় ক্রয় করিনি। পরে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে আগের মতো ‘ঢলন’ রেখে কেনা-বেচা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে উপজেলা ইউএনও নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বাংলানিউজকে বলেন, প্রথম সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ঝলমলিয়া হাটে ‘ঢলন’ প্রথা বিলুপ্ত করা হবে। তবে দ্বিতীয় সভায় হাটে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা সমঝোতার মাধ্যমে ‘ঢলন’ দিয়ে কেনাবেচা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২০
এসএস/এএটি