ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ভ্যাট প্রক্রিয়া সহজ করার আহ্বান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২০
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ভ্যাট প্রক্রিয়া সহজ করার আহ্বান

ঢাকা: ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের টিকে থাকার জন্য ভ্যাট প্রক্রিয়া সহজ করার আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।

শনিবার (১৪ নভেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘অর্থ আইন ২০২০ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২’ শীর্ষক অনলাইন ভিত্তিক ওয়ার্কশপে এ আহ্বান জানানো হয়।

সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য (ভ্যাট নীতি) মো. মাসুদ সাদিক এবং সদস্য (আয়কর নীতি) মো. আলমগীর হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।

ওয়ার্কশপের স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এ বছর সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশের অর্থনীতিও বিপর্যস্ত হয়েছে। এমন অবস্থায় ২০২০-২১ অর্থবছরে জাতীয় বাজেটের মূল লক্ষ্য ছিল অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করা এবং এ লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাথে ঢাকা চেম্বার একযোগে কাজ করছে।

তিনি বলেন, এনবিআর চলতি বছর রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করেছে, যা গত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৯.৮২ শতাংশ বেশি। সরকারের বিশাল ব্যয়ের জন্য অর্থসংস্থানের সুযোগ তৈরির পাশাপাশি এবছর ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি সত্ত্বেও ব্যবসায়ীরা কর ও ভ্যাট প্রদান অব্যাহত রেখেছেন।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশকে উন্নত অর্থনীতির দেশে পরিণত হওয়ার জন্য আমাদের কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই। এজন্য করের আওতা বৃদ্ধি, ট্যাক্স ও ভ্যাট রিটার্ন পদ্ধতি সম্পূর্ণ অনলাইন করা, রিফান্ড পদ্ধতি সহজীকরণ করা একান্ত আবশ্যক প্রয়োজন।

তিনি শিল্পখাতের উন্নয়নের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে স্থাপিত নিবন্ধিত কারখানাগুলো লিজরেন্টের উপর মূসক অব্যাহতি দেওয়ার আহবান জানান। পাশাপাশি স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারী খাতের উদ্যোক্তাদের বাজারে প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য কাঁচামাল আমদানীতে অগ্রীম কর হ্রাস করার প্রস্তাব করেন।

এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, দেশের অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখা, মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, ব্যবসায়িক কার্যক্রম চলমান রাখা এবং কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলা প্রভৃতি বিষয় মাথায় রেখেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চলতি বছরের বাজেট প্রণয়ন করেছে।

তিনি বলেন, করদাতাদের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে সরকার কর কাঠামো সংষ্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমরা আশা করছি আগামী বছর থেকে অনলাইনে ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রদান প্রক্রিয়া চালু করা সম্ভব হবে।

তিনি আরো বলেন, আরজেএসসি’তে বর্তমানে নিবন্ধিত কোম্পানীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৭৬ হাজার। এদের মধ্যে টিনধারী কোম্পানীর সংখ্যা ৭০ থেকে ৭৫ হাজার এবং মাত্র ৩৬ হাজার কোম্পানী প্রতিবছর রিটার্ন দাখিল করে থাকে। আমি আহবান জানাবো সকল নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানকে রিটার্ন দাখিলের জন্য।

এনবিআরের সদস্য (ভ্যাট নীতি) মো. মাসুদ সাদিক বলেন, দেশের ব্যবসায়ী সমাজ ভ্যাট প্রদান প্রক্রিয়া এবং ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনার প্রক্রিয়া সহজ করার দাবী জানিয়ে আসছে। এনবিআরের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে।

তিনি আগামী বাজেটে অন্তর্ভূক্তির জন্য প্রস্তাবনাগুলো এনবিআরের নিকট লিখিতভাবে জমাদানের পাশাপাশি খাত ভিত্তিক প্রস্তাবনাসমূহ আলাদা আলাদা ভাবে সুনিদিষ্ট বিভাগে জমাদানেরও প্রস্তাব করেন।

মাসুদ সাদিক জানান, ভ্যাট রিফান্ড প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অনেক ক্ষেত্রেই বিলম্ব হচ্ছে। তবে এ প্রক্রিয়া দ্রুততর করার জন্য এনবিআর কাজ করে যাচ্ছে।

ওয়ার্কশপে ডিসিসিআই’র আহ্বায়ক এম শফিকুল আলম এবং ডিসিসিআই ট্যাক্স কনসালটেন্ট যথাক্রমে ‘জাতীয় বাজেটে ঢাকা চেম্বারের প্রস্তাবনা ও ব্যবসায়িক খাতে এর প্রভাব’ এবং ‘ফিন্যান্স এ্যাক্ট ২০২০-এর প্রধান প্রতিবন্ধকতা’ শিরোনামে দুটো মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

অনুষ্ঠানে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ বাশিরউদ্দিন এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২০
ইএআর/এইচএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।