ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প-কারখানার আধুনিকায়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২১
রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প-কারখানার আধুনিকায়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনসহ অন্যরা

ঢাকা: রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প-কারখানাগুলোকে বর্তমান সময়ের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
 
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) শিল্প মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের নেতৃত্বে ডিসিসিআইর পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ কথা জানান।

এ সময় শিল্প সচিব কে এম আলী আজম উপস্থিত ছিলেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্থানীয় বাজার বেশ বড় এবং আমাদের নিজস্ব চাহিদা মেটানোর বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। এজন্য সরকারি শিল্প-কারখানার আধুনিকায়নে প্রযুক্তি ব্যবহার, উৎপাদিত পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং সর্বোপরি নতুন বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। যার মাধ্যমে দেশে আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এবং অথনৈতিক উন্নয়ন আরও গতিশীল হবে বলেও জানান তিনি।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যার ফলে জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করা গেছে এবং এক্ষেত্রে বেসরকারিখাতকে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি সারাদেশে শিল্পায়নকে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা ছোট ছোট ক্লাস্টারসমূহে সার্বিক সহায়তা দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ৭৫ শতাংশ ব্যবসায়ী ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা। তবে কটেজ, অতিক্ষুদ্র এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের তুলনায় মাঝারি উদ্যোক্তাদের আর্থিক ও কর্মক্ষম জনশক্তির সীমা অনেক বেশি থাকায় প্রণোদনা প্যাকেজ ও নীতিগত সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে কটেজ, অতিক্ষুদ্র এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা মাঝারি উদ্যোক্তাদের তুলনায় পিছিয়ে থাকেন। এ অবস্থা উত্তরণে আসন্ন শিল্পনীতিতে সিএমএসএমইদের সংজ্ঞা পুনঃনির্ধারণ এবং একটি ‘এসএমই আইন’ প্রণয়ন করার প্রস্তাব করেন। এছাড়া সিএমএসএমই খাতে সরকার ঘোষিত সব ধরনের নীতিগত সহায়তা বাস্তবায়ন করতে দেশের সব সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের খাতভিত্তিক একটি ডাটাবেজ তৈরি করার জন্য একটি বিশেষায়িত প্রকল্প গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।  

রিজওয়ান রাহমান বলেন, দেশের রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং বাজার সম্প্রসারণে সম্ভাবনাময় খাতসমূহে তৈরি পোশাক শিল্পের মতো ব্যাক টু ব্যাক এলসি ব্যবস্থা অনুমোদন করা প্রয়োজন। সেইসঙ্গে চামড়াজাত পণ্যের জন্য কেন্দ্রীয় বন্ডেড ওয়্যারহাউস এবং জাহাজ নির্মাণ, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কর অবকাশ সুবিধা দেওয়ার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে দেশের কৃষিনির্ভর অঞ্চল যেমন- যশোর, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেটে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পায়ন উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিশেষায়িত কৃষি নির্ভর অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।  

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, ভবিষ্যতে বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণে আইওটি, ব্লক চেইন, বিগ ডাটা, ক্লাউট কম্পিউটিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিক্স প্রভৃতি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তি বিষয়ে তরুণ প্রজন্মকে আরও দক্ষ করে তোলার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বাড়াতে আর্থিক ও নীতি সংক্রান্ত প্রণোদনা দেওয়ার আহ্বানসহ ‘জাতীয় শিল্প উন্নয়ন পরিষদ’-এর সদস্য হিসেবে দেশের বৃহৎ চেম্বার হিসেবে ডিসিসিআই’র সভাপতিকে অন্তর্ভুক্ত করণেরও প্রস্তাব করেন তিনি।               

শিল্প সচিব কে এম আলী আজম বলেন, আসন্ন শিল্পনীতিতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুতিগ্রহণ এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিষয়টিকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এছাড়া চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি বিষয়ে মানব সম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন করতে হবে। পাশাপাশি সরকার ঘোষিত অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার প্রস্তাবিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশের বেসরকারিখাতের অবদান নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের নীতি সহায়তা দেওয়া হবে।

এ সময় ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, এফসিএস, এফসিএ, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন, পরিচালক আরমান হক, আশরাফ আহমেদ, দ্বীন মোহাম্মদ, এনামুল হক পাটোয়ারী, গোলাম জিলানী, হোসেন এ সিকদার, খাইরুল মজিদ মাহমুদ, এম এ রশিদ শাহ সম্রাট, মো. রাশেদুল করিম মুন্না, মো. সাহিদ হোসেন, মো. জিয়া উদ্দিন, নাসিরউদ্দিন এ ফেরদৌস ও ইঞ্জিনিয়ার শামসুজ্জোহা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২১
জিসিজি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।