ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

সুদের হার কমায় ক্ষুদ্র আমানতকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২১
সুদের হার কমায় ক্ষুদ্র আমানতকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত

ঢাকা: ব্যাংকগুলো ঋণের চেয়ে আমানতের সুদ কমিয়ে দেওয়ায় গেলো বছরের ডিসেম্বর শেষে ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান (স্প্রেড) আরও বেড়েছে।

২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর গড় স্প্রেড বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ০৭ শতাংশে।

এর একমাস আগে নভেম্বরে স্প্রেড ছিল ২ দশমিক ৯৮ শতাংশ। গেলো বছরের অক্টোবরে স্প্রেড ছিল ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

জ্যেষ্ঠ ব্যাংকাররা পূর্বাভাস দিয়ে বলছেন, ব্যাংকিং খাতে অতিরিক্ত তারল্যের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী মাসে নতুন আমানতের সুদের হার আরও কমবে।

তারা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। ফলে ব্যাংকিংখাতে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ০৪ ট্রিলিয়ন টাকা।

২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশে। গেলো বছরের জুলাই শেষেও বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ২০ শতাংশ।

ব্যাংকাররা বলছেন, করোনা ভাইরাস মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি দ্রুত পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্প্রসারিত মুদ্রানীতি ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে তারল্যের উচ্চ প্রবাহের দিকে ঠেলে দিয়েছে। আর বাজারে তারল্যের উচ্চ প্রবাহের কারণে বেশিরভাগ ব্যাংক সব ধরনের আমানতের সুদের হার কমিয়ে ফেলেছে, যা বিশেষ করে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের প্রভাবিত করছে।

পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল হালিম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা তহবিল ব্যবস্থাপনার ব্যয় কমানোর জন্য আমানতের সুদ কমিয়ে দিয়েছি। আমাদের ব্যাংক বর্তমানে ৯ শতাংশের পরিবর্তে ৮ শতাংশ সুদে ভালো গ্রহীতাদের ঋণ বিতরণ করছে। ’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ব্যাংকগুলোতে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আমানতের গড় সুদহার ছিল ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ। একমাস আগে নভেম্বরে ছিল ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ। অপরদিকে, ঋণের সুদহার ৭ দশমিক ৬২ শতাংশ থেকে ৭ দশমিক ৬১ শতাংশে নেমে এসেছে।

২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর গড় স্প্রেড ছিল ২ দশমিক ১৩ শতাংশ, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর স্প্রেড ছিল ৩ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর স্প্রেড ছিল ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ।

বেসরকারি ব্যাংক এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘অতিরিক্ত তারল্যের ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে আমানতের সুদহার আরও কমতে পারে। ’

২০২০ সালের ১ এপ্রিল এক অংকের সুদহার বাস্তবায়নের ফলে স্প্রেড একলাফে ২ দশমিক ৯২ শতাংশে নেমে আসে। আগের মাস মার্চেও স্প্রেড ছিল ৪ দশমিক ০৭ শতাংশ।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২১
এসই/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।