ঢাকা: ঋণ ও আমানতের সুদহার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ব্যাংকাররা। তারা মনে করেন সুদহার বাজার ব্যবস্থার মাধ্যমেই নির্ধারণ হোক।
দীর্ঘদিন পর বুধবার (১১ আগস্ট) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় অংশগ্রহণকারীরা বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা গর্ভনরের কাছে এ দাবি জানান। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
ব্যাংকার্স সভায় নিয়মিত কার্যবিবরণীর নির্দেশনার আলোকে সব ক্ষেত্রে ৯ শতাংশ সুদহার বাস্তবায়নের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংক চলুক গর্ভনরের কাছে এমনটা চেয়েছেন এমডিরা। তারা মনে করেন আমানত ও ঋণের সুদহারও বাজার ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী পরিচালিত হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক যদি সুদহার বেঁধে দেয় তাহলে ব্যাংক পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে। সম্প্রতি আমানতে সুদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা দেয় যে মেয়াদী আমানতের সুদের হার মূল্যস্ফীতির সুদের হারের নিচে হতে পারবে না। বর্তমানে মূল্যস্ফীতির সাড়ে পাঁচ শতাংশের মতো। অর্থাৎ আমানতের সুদের হারও হবে সাড়ে পাঁচ শতাংশ।
এমডিদের অনুরোধের কারণে গভর্নর ফজলে কবির বলেন, এ বিষয়ে আরও কাজ করার আছে। সঞ্চয়পত্রের মতো মেয়াদী আমানতের সুদের হারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধাপ করা যায় কিনা সে বিষয়েও চিন্তা করা হচ্ছে। তবে সভায় এ বিষয়ে কোনো চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
পুর্ব র্নিধারিত আলোচনা শেষে এমডিরা সুদহারের বিষয়ে কথা বলেন।
তারা বলেন, বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ঋণের সুদহার কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৭ শতাংশেও ঋণ দিতে হচ্ছে। এটা বাজার অর্থনীতির নিয়ম অনুযায়ীই হয়েছে।
অন্যদিকে আমানতের সুদহার যদি সাড়ে পাঁচ শতাংশে বেঁধে দেওয়া হয় তাহলে তহবিল ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে ব্যাংক চালানোই কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। কারণ বেশিরভাগ ব্যাংকেরই ব্যক্তি আমানত ও মেয়াদী আমানত ৩০ শতাংশের বেশি। অন্যদিকে এখন ব্যাংকগুলো মানুষের দোরগোড়ায় যাচ্ছে।
ব্র্যাঞ্চ ব্যাংকিং বা ক্ষুদ্র পর্যায়ে কার্যক্রম চালাতে ব্যাংকের খরচ এখন বেশি হচ্ছে। এজন্য আমানতে যদি সুদ বেশি দেওয়া লাগে তাহলে ব্যাংক লোকসান করবে। এমন পরিস্থিতিতে সুদহার নির্ধারণের প্রজ্ঞাপন যাতে বাস্তবায়ন না করা লাগে এমন আবদার করেছেন ব্যাংকগুলোর এমডিরা।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ আমানতই যখন ব্যক্তি পর্যায়ের তাহলে আমানতে সুদ কম দেওয়া মানে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। অন্যদিকে স্পন্সর বা ব্যাংক পরিচালকদের বেশি করে ডিভিডেন্ড দিয়ে তাদের লাভবান করা হচ্ছে। যেখানে পরিচালকরা ৩৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড পাচ্ছে। সেখানে যদি সাধারণ আমানতকারীরা ৩ শতাংশ পায় তাহলে তাদের সঙ্গে বৈষম্য ছাড়া আর কিছু নয়।
বাংলাদেশ সময়: ০২০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২১
এসই/আরআইএস