ঢাকা: দেশের অগ্রণী দুগ্ধজাত প্রতিষ্ঠান প্রাণ ডেইরি লিমিটেড এবং ইউরোপীয় বহুজাতিক দুগ্ধ সমবায় প্রতিষ্ঠান আরলা ফুডসের স্থানীয় সাবসিডিয়ারি আরলা ফুডস বাংলাদেশ লিমিটেড, আভ্যন্তরীণ দুগ্ধখাত উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে একাত্মতায় টেকসই উপায়ে অধিকতর উন্নত মানের দুগ্ধ উৎপাদনের উদ্দেশে একটি যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
প্রাণ-আরএফএল এর গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং সিইও আহসান খান চৌধুরী এবং আরলা ফুডস বাংলাদেশ এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর পিটার হলবার্গ সম্প্রতি ঢাকায় আরলা ফুডস এর কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগ শুরুর উদ্দেশ্যে একটি লেটার অব ইন্টেন্ট সই করেছেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাণ গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইলিয়াস মৃধা, প্রাণ ডেইরির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, আরলা ফুডস বাংলাদেশ এর হেড অব মার্কেটিং গালিব বিন মোহাম্মদ এবং কমার্শিয়াল প্রজেক্ট ম্যানেজার টোনি লেটনেন।
উদ্যোগের প্রাথমিক পর্যায়ে উভয় প্রতিষ্ঠান টেকসই দুগ্ধ খামারের সার্বিক ধারণক্ষমতা উন্নয়ন এবং অন্যান্য সম্ভাবনা যাচাইয়ের উদ্দেশে বিভিন্ন খামার নিরীক্ষা করবে। সমসাময়িকভাবে চলমান দুগ্ধ সংগ্রহ কার্যক্রমকে আরও কার্যকরি করে তুলতে প্রশিক্ষক, সংগ্রহ কর্মী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এছাড়াও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অংশীদারিত্বে সামাজিক, পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক প্রভাব যাচাইয়ের উদ্দেশে পদ্ধতিগতভাবে এবং বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে।
প্রাণ-আরএফএল এর গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং সিইও আহসান খান চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের দুগ্ধ শিল্পের জন্য ভালো কিছু করার এটি একটি বিশাল সুযোগ। প্রাণ ডেইরি ইতোমধ্যেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের চুক্তিভিত্তিক দুগ্ধ খামারিদের সঙ্গে কাজ করছে এবং তাদের কর্মদক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তবে একই সঙ্গে দুগ্ধ মান এবং উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে টেকসই দুগ্ধ উৎপাদনে মনোযোগী হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের স্থানীয় দুগ্ধ খাতের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও অবদান রাখার ব্যাপারে জোর দিতে হবে। আমি আশা করছি, এ উদ্যোগটি আমাদের দুগ্ধ খাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। ’
এ প্রয়াসটির গুরুত্ব সম্পর্কে আরলা ফুডস বাংলাদেশ এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর পিটার হলবার্গ বলেন, ‘কার্যক্রম পরিচালনাকারী সব দেশেই আরলা সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ থাকে। আমরা বিশ্বাস করি দেশের দুগ্ধ খাতের সামগ্রিক উন্নয়নে আমরা অবদান রাখতে সক্ষম হবো। বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম দুগ্ধ সমবায় হিসেবে এবং প্রায় ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই খাতে কার্যক্রম পরিচালনাকারী হিসেবে টেকসইভাবে এ খাতে অর্থনৈতিক সাফল্য আনতে পারা সম্ভব বলে আমরা মনে করি। আমরা এ উদ্যোগে আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে টেকসই দুগ্ধ চাষ, খাদ্য নিরাপত্তা এবং প্রযুক্তি সম্পর্কিত আমাদের অভিজ্ঞতার আলোকে অবদান রাখার জন্য উন্মুখ।
প্রাণ ডেইরি লিমিটেড দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দুগ্ধ খামারিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এবং দুধের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ২০০১ সাল থেকে দুধ সংগ্রহ শুরু করে। এটি বাংলাদেশে ‘ডেইরি হাব’ ধারণা গড়ে তুলেছে। ডেইরি হাব স্থাপনের লক্ষ্য ছিল দুগ্ধ খামারিদের কাছ থেকে সরাসরি দুধ সংগ্রহ করা, যেন তারা ন্যায্যমূল্য পায় এবং বাংলাদেশকে দুগ্ধে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলে। প্রাণের সাতটি ডেইরি হাব এবং হাবের অধীনে ১০০টিরও বেশি দুধ সংগ্রহ ও শীতলকরণ কেন্দ্র রয়েছে। প্রাণ ডেইরিতে ১২ হাজার চুক্তিবদ্ধ কৃষক রয়েছেন। প্রতিদিন প্রাণ সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে গড়ে দুই লাখ লিটারের বেশি দুধ সংগ্রহ করে। সংগৃহীত দুধ নিজস্ব গাড়িতে করে নরসিংদীর কারখানায় আনা হয়।
আরলা ফুডস বাংলাদেশ লিমিটেড এবং গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির এফএসএসসি ২২০০০(ভার্শন ৫) সার্টিফিকেশন প্রাপ্ত প্যাকেজিং প্ল্যান্ট ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
প্রতিষ্ঠানটির পোর্টফোলিওতে বর্তমানে রয়েছে ডানো পাওয়ার, ডানো গ্রোথ শক্তি এবং ডানো ডেইলি পুষ্টির মত দারুণ জনপ্রিয় সব দুধের ব্র্যান্ড, যা প্রতি মাসে লাখো বাংলাদেশি ভোক্তাদের সাশ্রয়ী দামে দুধের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে চলছে।
আরলা ফুডস
ডেনমার্ক, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ এবং নেদারল্যান্ডস এর ৯ হাজার ৪০০ কৃষকের মালিকানাধীন একটি আন্তর্জাতিক দুগ্ধজাত পণ্য প্রতিষ্ঠান আরলা ফুডস। আন্তর্জাতিক দুগ্ধজাত পণ্য বাজারের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান আরলা ফুডস এর সুপরিচিত ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে আরলা®, লুরপাক®, পুক®, ক্যাস্টেলো® এবং ডানো®। আরলা ফুডস শুধুমাত্র টেকসই কৃষি এবং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মানসম্মত দুগ্ধ পুষ্টি দেওয়ার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধই নয়, প্রতিষ্ঠানটি অর্গানিক দুগ্ধজাত পণ্যের বিশ্বের বৃহত্তম প্রস্তুতকারকও। ডানো® বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে দুগ্ধজাত পুষ্টি গ্রহণের সুযোগ দেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২২
আরআইএস