ঢাকা: কোভিড-১৯ এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ উদ্ভুত বিরূপ পরিস্থিতি থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য বিশ্বব্যাংকের কাছে বাংলাদেশের জন্য কনসেশনাল আইডিএ তহবিলের বর্ধিত সহায়তার অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
রোববার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার এবং নবুনিযুক্ত বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এ অনুরোধ জানিয়েছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খানসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এছাড়া বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক এবং রিজিওনাল ডিরেক্টর গুয়াংজে চেন ও ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যানড্যান চেন।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সভায় বিশ্বব্যাংকের ভাইস-প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়োচিত পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন।
ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) দেশগুলোর অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে আইডিএ ২০ খুব সহায়ক হবে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী, জুলাই ২০২২ থেকে জুন ২০২৫ এর জন্য নির্ধারিত ৯৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আইডিএ ২০ সাইকেল কে স্বাগত জানান। তিনি কোভিড এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ উদ্ভুত বিরূপ পরিস্থিতি থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশের জন্য কনসেশনাল আইডিএ তহবিলের বর্ধিত সহায়তার অনুরোধ করেন।
অর্থমন্ত্রী বিশ্বব্যাংককে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে অভিহিত করে বলেন, আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রমে বিশ্ব ব্যাংক হতে ১৯৭২ সাল থেকে আমরা এযাবৎ ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ ও অনুদান সহায়তা পেয়েছি যার মধ্যে ২৬.৬ বিলিয়ন ডলার অর্থছাড় করা হয়েছে। আমরা এ পর্যন্ত সুদ ও আসল মিলে ৬.৩৬ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছি। বিশ্বব্যাংক ২০২৩-২০২৭ অর্থবছরের জন্য কান্ট্রি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্ক (সিপিএফ) প্রস্তুত করছে।
অর্থমন্ত্রী ভাইস প্রেসিডেন্টকে, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা এবং ডেল্টা প্ল্যান এবং অন্যান্য সরকারি মহাপরিকল্পনা, সেক্টরাল প্ল্যান এবং নীতিগুলির সঙ্গে সিপিএফ’কে একিভূত করার জন্য অনুরোধ করেন।
পরিবেশগত পুনরুদ্ধার এবং ঢাকা শহরের চারপাশের নদীগুলোর নাব্য নিশ্চিত এবং ঢাকার সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য ‘বিউটিফিকেশন অব ঢাকা’ নামে একটি প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রকল্প নিয়ে কাজ করার জন্য অর্থমন্ত্রী বিশ্ব ব্যাংককে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, আমরা ২০১৯ থেকে এপ্রিল ২০২২ সময়ে ১ বিলিয়ন বাজেট সাপোর্ট পেয়েছি। চলতি অর্থ বছরে আরও ৫০০ মিলিয়ন বাজেট সাপোর্ট পাওয়া যাবে মর্মে আশা করছি। গ্রীণ, রিসাইলেন্স৷ ইনকলসিভ ডেভেলপমেন্ট (জিআরআইডি) ডিপিসির ২৫০ মিলিয়ন করে আগামী ২ অর্থবছরে ৫০০ মিলিয়ন পাওয়া যাবে মর্মে প্রত্যাশা করছি। ২০২৩-২০২৫ সাল মেয়াদে পাইপলাইনে রয়েছে ৬.১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব।
বাংলাদেশ সময়: ২৩১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩,২০২২
জিসিজি/এসএ