ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে এক নবীন ছাত্রীকে ছাত্রলীগ নেত্রী ও তার সহযোগীরা নির্যাতনের ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশের পর ক্যাম্পাস ছেড়েছেন অভিযুক্তরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস ছেড়েছেন তারা।
একই সঙ্গে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাকে তদন্ত প্রতিবেদনের আগ পর্যন্ত সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলম এবং ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি ফয়সাল সিদ্দীকী আরাফাত এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওই হলের প্রভোস্ট বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মৌখিক নির্দেশে অভিযুক্তদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছি। তারা সন্ধ্যার পর হল ছেড়ে চলে গেছেন। ’
শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘তদন্ত প্রক্রিয়া চলাকালীন অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেত্রী কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না। তদন্তে তিনি দোষী সাব্যস্ত হলে আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করব। ’
এর আগে দুপুরে এ ঘটনায় একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও একজন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কমিটি করে পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক আইনজীবীর করা রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের করা কমিটির প্রতিবেদনও দাখিল করতে বলা হয়েছে। আর ক্যাম্পাসের বাইরে রাখতে বলা হয়েছে নির্যাতনে জড়িত দুই শিক্ষার্থীকে। নির্যাতনের শিকার হওয়া শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এক নবাগত ছাত্রীকে র্যাগিংয়ের নামে নির্যাতনের অভিযোগ উঠে।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত প্রায় তিনটা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। ফুলপরি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ভুক্তভোগী। র্যাগিংয়ের সময় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীরা তাকে মারধর করেন ও বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
পরদিন সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভয় পেয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী। র্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী। অপরদিকে সিনিয়রদের সঙ্গে বেয়াদবি ও বহিরাগত দিয়ে হুমকির শাস্তির দাবি চেয়ে নির্যাতিত ছাত্রীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দিয়েছেন ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা।
বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩
এএটি