ইবি: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপাচার্যের কণ্ঠসদৃশ শিক্ষক নিয়োগের অডিওগুলো কাল্পনিক বলে উল্লেখ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (২০ ফ্রেুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালামের বরাত দিয়ে তথ্য প্রকাশনা ও জনসংযোগ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. আমানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ তথ্য জানা যায়।
বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগের মত একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে যখন এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং সত্য উদঘাটনের জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং হল প্রশাসন কর্তৃক গঠিত ভিন্ন ভিন্ন কমিটি কাজ করছে।
ঠিক একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সহধর্মীনিসহ একাধিক নামে ফেক আইডি খুলে সেখান থেকে একান্ত ব্যক্তিগত আলাপ-আলোচনা সংযোজন-বিয়োজন করে সোশ্যাল ও অন্যান্য মিডিয়ায় উপাচার্য নিয়োগ-বাণিজ্য করছেন এমন সব খবর প্রকাশ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য কথিত নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিতই হয়নি। পরীক্ষার ব্যাপারে কোনো প্রশ্নপত্রই প্রণীত হয়নি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত নিয়োগ বোর্ডের সদস্যের উপস্থিতিতে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ঠিক আগে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্ন নিয়ে প্রশ্নপত্র প্রনয়ণ করা হয় এবং সদস্যদের উপস্থিতিতে কম্পিউটারে তা’ চুড়ান্ত করে সিলগালা অবস্থায় পরীক্ষার হলে নিয়ে যাওয়া হয়।
কথিত নিয়োগ পরীক্ষার ব্যাপারে এসবের কিছুই সম্পন্ন হয়নি। ইউজিসি প্রয়োজনে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাল্পনিক এমন প্রচারনায় কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয় সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ফারহা জেবিন নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে তিনটি অডিও পোস্ট করা হয়। অডিওর কথোপকথনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালামের বলে দাবি করা হয়। এসব অডিওতে নিয়োগ নিয়ে ও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন নিয়ে উপাচার্যকে বিভিন্ন কথা বলতে শোনা যায়। তবে অডিওটির অন্য প্রান্তের কোনো কথা শোনা যায়নি।
অডিওতে একটি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড বাতিল হওয়ার কারণ ও আগামীতে বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়া সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও নিয়োগ প্রার্থীকে বিভিন্ন প্রশ্ন বলে দেওয়া হয়। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড স্থগিতের ঘটনা নিয়ে এ আলোচনা করা হয়। অডিওতে ওই বিভাগের অলি নামের (সংক্ষিপ্ত নাম) এক শিক্ষক প্রার্থীর নাম ধরে সম্বোধন করতে শোনা যায়।
এ ঘটনায় শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপাচার্যের নির্দেশে ইবি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান।
পরে শনিবার দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী ও চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দিয়ে উপাচার্যবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। একইদিনে অডিওতে উপাচার্যের কথোপকথনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরাম। একই অভিযোগে ক্ষুব্ধ ও হতাশা ব্যক্ত করে উপাচার্যের অবস্থান জানানোর দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
এ ঘটনায় সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ফের দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী ও চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দিয়ে উপাচার্যবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বেলা ১২টার দিকে প্রশাসনের নির্দেশে কার্যালয়ে কোনো ডিভাইস আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে ইবি থানা পুলিশ ও ডিএসবি তল্লাশি চালায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
আরএ