ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

ভিসির ‘কণ্ঠসদৃশ’ অডিও বাজল মাইকে, কার্যালয়ে দিনমজুরদের তালা

ইবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩
ভিসির ‘কণ্ঠসদৃশ’ অডিও বাজল মাইকে, কার্যালয়ে দিনমজুরদের তালা

ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের কন্ঠসদৃশ শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত অডিওগুলো এবার বাজানো হয়েছে মাইকে।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে ভ্যানে রাখা এক মাইকে হঠাৎ বেজে উঠে বিতর্কিত অডিওগুলো।

কিছুক্ষণ পর পর মাইকে অডিওগুলো এক এক করে বাজানো হয়। তবে অডিওগুলো বাজানোর সময় আশপাশে কাউকে দেখা যায়নি।

এর কিছুক্ষণ পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ এসে মাইক বন্ধ করে দেন। কে এখানে মাইক রেখেছে তা জানতে চান। এসময় দিনমজুর ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে জানতে চাইলে তারা রাখেননি বলে জানান।  

প্রক্টর তাদের বলেন,‌ ‘ তোমরা যেহেতু জানো না তাহলে মাইকটি আমি থানায় দিয়ে আসি। পুলিশ বের করুক কে মাইক রেখেছে। ’ 

প্রক্টরের এ কথা শুনে ১০টার দিকে ডে লেবাররা মাইকসহ ভ্যান সরিয়ে নেয়।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিসিবিরোধী আন্দোলনরত দিনমজুর সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মাইকটি নিয়ে আসে। তাদের নির্দেশেই অডিওগুলো বাজানো হয়।  

প্রত্যাক্ষদর্শীরাও এমন তথ্য জানিয়েছে।  

এ বিষয়ে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান বলেন, কে বা কারা মাইকে অডিও ক্লিপ বাজিয়েছে, তা আমাদের জানা নেই। আমরা উপাচার্যের অপসারণ দাবির আন্দোলনে ব্যস্ত।

এদিকে তৃতীয় দিনের মতো উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডে-লেবাররা।

একই সঙ্গে কার্যালয়ের সামনে উপাচার্য অপসারণের দাবিতে ব্যানার ঝুলিয়েছে তারা।

আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন এবং তাদের বেশিরভাগই সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান টিটু এবং রাসেল জোদ্দারের নেতৃত্বে কার্যালয়ের সামনে উপাচার্য অপসারণের দাবিতে অন্তত ৩০ জনকে স্লোগান দিতে দেখা যায়।

এদিকে অনাকাঙিক্ষত ঘটনা এড়াতে আগের দিনগুলোর মতোই আজকেও ক্যাম্পাসে বিপুল সংখ্যাক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

আজকেও কার্যালয়ে আসেননি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম। ডে লেবারদের আন্দোলনের কারণে গত কয়েক দিন ধরে কার্যালয়ে আসছেন না উপাচার্য। বাংলোতে বসেই ক্যাম্পাসের দাপ্তরিক কাজ চালাচ্ছেন।

এর গত আগে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ফারহা জেবিন নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে তিনটি অডিও পোস্ট করা হয়। অডিওর কথোপকথনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড শেখ আব্দুস সালামের বলে দাবি করা হয়।  

এসব অডিওতে নিয়োগ নিয়ে ও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন নিয়ে উপাচার্যকে বিভিন্ন কথা বলতে শোনা যায়।  

অডিওতে একটি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড বাতিল হওয়ার কারণ ও আগামীতে বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়া সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও নিয়োগ প্রার্থীকে বিভিন্ন প্রশ্ন বলে দেওয়া হয়।  

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড স্থগিতের ঘটনা নিয়ে এ আলোচনা করা হয়। অডিওতে ওই বিভাগের অলি নামের (সংক্ষিপ্ত নাম) এক শিক্ষক প্রার্থীর নাম ধরে সম্বোধন করতে শোনা যায়।

এ ঘটনায় গত ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডে-লেবাররা। পরে বেলা ১২টার দিকে প্রশাসনের নির্দেশে কার্যালয়ে কোনো ডিভাইস আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে ইবি থানা পুলিশ  ও ডিএসবি তল্লাশি চালান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।