ঢাকা: শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে থাকা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ভেবে দেখতে পারে। এমনটি বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
সোমবার (৫ জুন) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) দিনব্যাপী দেশের সবচেয়ে বড় এডুকেশন এক্সপোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি একথা বলেন। এ শিক্ষামেলার আয়োজন করে এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব)।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, দেশের অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আমি সবগুলো নিয়ে বলছি না। অনেকগুলো নিয়ে অনেক কথা আছে। কিন্তু মানের দিক থেকে অনেক ভালো করছে এরকম ৫, ৬, ৭ কিংবা তার অধিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যেগুলোর সক্ষমতা হয়েছে আমি বিশ্বাস করি, সেগুলোতে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর বিষয়টি এখন বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসি ভেবে দেখতে পারে। তা না হলে আমরা গবেষণাকে উৎসাহিত করতে পারবো না। কাজেই এটি করা খুব দরকার।
তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রধান হাতিয়ার শিক্ষা। তাই আমাদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের গবেষণাসহ সব খাতে জোর দিতে হবে। এখানে শিক্ষার উন্নয়নের জন্য শুধু অবকাঠামো বা বিল্ডিং বানালেই হবে না, আমাদের একাডেমিক কার্যক্রমের গতি বাড়াতে হবে। আমাদের একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান করতে হবে। একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান ঠিক করে দেবে আমাদের শিক্ষার মান কেমন হবে। একই সঙ্গে আমাদের গবেষণার সংস্কৃতি বাড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের শিক্ষাখাতে প্রতিবছরই বরাদ্দ বাড়াচ্ছে সরকার। জিডিপির হিসেবে এ হার কম হলেও সামগ্রিক হিসেবে এটি বাড়ছে। এখন আমাদের গবেষণায়ও বরাদ্দ বেড়েছে।
শিক্ষার্থীদের কর্মজগতে প্রবেশের জন্য নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, বাংলা, ইংরেজির পাশাপাশি ভাষাজ্ঞান সবখাতেই আমাদের তরুণদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। নিয়োগকর্তা এবং প্রার্থীর দক্ষতার সমন্বয় করতে হবে। তাহলে কর্মজগতে আমাদের তরুণরা পিছিয়ে থাকবে না। শুধু চাকরি খুঁজলে হবে না- তরুণদের দক্ষতাও বাড়াতে হবে। সেজন্য আগামী প্রজন্মকে আমরা প্রাথমিক-মাধ্যমিক থেকেই দক্ষ করে গড়ে তুলতে কাজ করছি। এর সুফল এখন না পাওয়া গেলেও ২০৪১ সালের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করতে ২০২৫ সালের মতো সময় লাগবে। এর সুফল তার পরবর্তী সাত অথবা আট বছর পর পাওয়া যাবে এবং সেজন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর স্টলগুলো ঘুরে দেখেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এ সময় মেলার অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিরাও তার সঙ্গে মেলা ঘুরে দেখেন।
ইরাব সভাপতি মীর মোহাম্মদ জসিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসাইনের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভিসি অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, মেলায় ৬০টির বেশি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের গবেষণা, প্রকাশনা ও উদ্ভাবন নিয়ে হাজির হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২৩
এইচএমএস/আরআইএস