ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

দুর্ঘটনায় ইবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও হামলায় সাবেক সম্পাদক আহত

ইবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৯ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২৩
দুর্ঘটনায় ইবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও হামলায় সাবেক সম্পাদক আহত

ইবি: সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন।  

মঙ্গলবার (৬ জুন) ঢাকা যাওয়ার পথে রাজবাড়ীতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তার ব্যক্তিগত প্রাইভেট কারটি।

উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় আনা হয়েছে।  

এদিকে পরদিন (বুধবার) সকালে দুর্বৃত্তদের হামলার শিকারে আহত হয়েছেন ইবির শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এছাড়া মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব ড. আ স ম শোয়াইব আহমেদ ঢাকা যাওয়ার পথে মাগুরায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। তিনিও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রয়েছেন।

জানা যায়, গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন ভোরে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় মেডিকেল চেকআপের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন।  

পথে তার গাড়ি রাজবাড়ী অবস্থান করলে একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে। এতে তিনি মাথায় ও শরীরে আঘাতপ্রাপ্ত হন৷ পরে তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়৷ পরবর্তীতে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নজরে এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।

একই দিনে কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব ড. আ স ম শোয়াইব আহমেদ সকালে গ্রিন লাইন বাসে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। পথে মাগুরার ‘ইছা-খাদা’ নামক স্থানে তার বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এসময় তিনি ঘাড়ে ও ডান হাতে ব্যথা পান। তাকে মাগুরা সরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।  

পরে প্রশাসনের নজরে এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। এখনও তিনি আশঙ্কামুক্ত হয়নি বলে জানা গেছে।

এদিকে আজ সকালে শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান সকালে হাঁটতে বের হলে কুষ্টিয়ার হাউজিং ডি ব্লক এলাকায় তার প্রতিবেশী ব্যাংক কর্মকর্তা সোহেল মাহমুদ কর্তৃক হামলার শিকার হন।  

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, এসময় ওই ব্যাংক কর্মকর্তা তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারে ও লাথি এবং তার হাতের আঙুল ভেঙে দিয়ে শরীরে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেন। তাকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দ্রুত শহর ছাড়ার ও প্রাণনাশের হুমকি দেন।  

ঘটনাস্থলে কেউ না থাকায় পরবর্তীতে বিষয়টি জানতে পেরে তার সহকর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল বারী তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।  

জানা যায়, বিল্ডিং করাকে কেন্দ্র করে প্রতিহিংসার জেরে দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা। এর আগেও বিভিন্নভাবে তাকে হেনস্তার চেষ্টা করেছেন তিনি।  

বিষয়টি ভুক্তভোগী শিক্ষক অগ্রণী ব্যাংক চৌড়হাস ব্রাঞ্চের ম্যানেজারকে জানান। ম্যানেজার ব্যাংক কর্মকর্তা সোহেল মাহমুদের বিরুদ্ধ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এতে তিনি আরো বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষকের পিছু লাগেন এবং তাকে আক্রমণ করার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেন।  

এর আগে ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বরে বাড়ির নির্মাণ কাজে বাধা ও প্রাণ নাশের হুমকি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর অভিযোগ করেছিলেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।  

অধ্যাপক ড. আব্দুল বারী বলেন, আমরা ছয়জন মিলে একটা বিল্ডিং তৈরি করছি। তার পাশেই উনার বাসা। সমস্যার মূল কারণ হলো, আমরা কেন তার বাসার পাশে ছয়/সাততলা বিল্ডিং করছি? আগে থেকেই তিনি হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন। আজকে স্যারকে (মোস্তাফিজুর রহমান) একা পেয়ে তিনি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন।

হামলার শিকার অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদককে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।  

হামলাকারী ব্যাংক কর্মকর্তা সোহেল মাহমুদ বলেন, উনার (মোস্তাফিজুর রহমান) সঙ্গে আমার সর্বশেষ দেখা হয়েছে দশদিন আগে। উনার অভিযোগটা ভিত্তিহীন। এর কোনো অস্তিত্বই নেই।  

অগ্রণী ব্যাংক চৌড়হাস ব্রাঞ্চের ম্যানেজার বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। যেহেতু এটা ব্যাংকের লেনদেনের বাইরের বিষয় সেহেতু এখানে আমার কিছু করার নেই।  

ইবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, আগেও এটা নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। তখন আমাদের শিক্ষকরা মিলে এর একটা মীমাংসা করা হয়েছিল। তারপর আজ আবার এ ধরনের একটা ঘটনা ঘটেছে। আমরা আবারও বিষয়টি নিয়ে বসে নিজেদের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা করব।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।