ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

জবির বাণী ভবনে ঝুঁকি নিয়ে কর্মচারীদের বসবাস

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪১ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৩
জবির বাণী ভবনে ঝুঁকি নিয়ে কর্মচারীদের বসবাস

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকায় রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বাণী ভবন। পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের এক নম্বর ঈশ্বরচন্দ্র দাস লেনের ৩৫ ও ৩৬ প্যারিদাস রোডে এটির অবস্থান।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এ ভবনটিকে অনেক আগেই ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা দিয়েছে।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের থাকার জন্য কোনো সুব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও এ ভবনে বসবাস করেন তারা। ভবন পরিত্যাগ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একাধিকবার আদেশ দেওয়া হলেও অন্য কোথাও আবাসিক সুবিধা না থাকায় বাণী ভবন ছাড়েননি তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, জগন্নাথ কলেজ আমলে ছাত্রদের আবাসিক হল হিসেবে বাণী ভবন ব্যবহৃত হতো। এরশাদ সরকার ১৯৮৫ সালে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা‌ করে। এরপর স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে ছাত্রদের সংঘর্ষ হয়। পরে ছাত্ররা ভবনটি ছেড়ে চলে যায়। পরে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা এ ভবনটিতে বসবাস করতে শুরু করেন। একসময় এ ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ছেড়ে দিতে কর্মচারীদের কয়েকবার নির্দেশ দিলেও ভবনটি ছেড়ে যায়নি তারা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে দুর্ঘটনা ঘটলে কর্মচারীদেরই এর দায় নিতে হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পুরাতন ভবনের ফটকে লেখা বাণী ভবন। এটির ওপরে সাইনবোর্ডে লেখা কর্মচারী আবাস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ভবনের বাইরের দিকের একটি ছোট রুম ভাড়া দেওয়া। চলছে পুরাতন কাগজ ও লোহালক্কড়ের ব্যবসা। ভবনটিতে নেই বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। রান্না হয় সিলিন্ডার গ্যাসে। ভবনটির ১৯টি রুমে চারটি কর্মচারী পরিবারসহ বাস করছেন প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মচারী। ভবনের কয়েকটি রুম টিনশেডের। একপাশে ভেঙে পড়েছে ভবনের ছাদ। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে অন্যান্যদের মতোই বসবাস করছেন রানা আহমেদ। তিনি বলেন, আমার বেতন অল্প। বাইরে ভাড়া থাকতে গেলে অনেক খরচ। সেজন্য ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও এখানে বসবাস করছি। এতদিনেও এখানে বিদ্যুতের ব্যবস্থা হয়নি। গোসলখানা ও টয়লেটের অবস্থাও খারাপ। কোনো রকমে মাথা গোঁজার একটু জায়গা আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনটি ছাড়তে নিষেধ করেছে। কিন্তু এ অল্প বেতনে বাইরে থাকা কঠিন।

এ বিষয়ে রাজু আহমেদ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক কর্মচারী জানান, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। তেমন গোছালোও নয়। পরিস্থিতির শিকার তাই এখানে থাকছি। পুরাতন ভবন ভেঙে টিনশেড করে দিলে অন্তত নতুন ক্যাম্পাসে কর্মচারী আবাস তৈরি হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা এখানে নিরাপদে থাকতে পারবো।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সমস্যা রয়েছে। ছাত্রদের জন্য কোনো হল নেই। ছাত্রীদের জন্য একটি হল আছে। বাণী ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ওখানে বসবাসরত কর্মচারীদের সরে যেতে বলা হয়েছে। কেউ ঝুঁকিতে থাক এটি আমরা চাই না। কেরানীগঞ্জে ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ চলছে। এ ক্যাম্পাস নির্মাণ হলেই স্থায়ী সমাধান হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৩
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।