ঢাকা: সিলেটের সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওড়ে ঘুরতে গিয়ে আটক বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪ শিক্ষার্থীকে অন্যায়ভাবে মামলা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) বিকালে বুয়েট ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি করা হয়।
তিনি বলেন, জব্দকৃত মালামাল হিসেবে কতগুলো জিনিসপত্র তাদের কাছ থেকে উদ্ধারের যে প্রসঙ্গ অবতারণা করা হয়েছে এটি অত্যন্ত হাস্যকর এবং পরিষ্কারভাবে বানোয়াট বিষয়। তারা টার্ম-ব্রেকের বন্ধে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে ঘুরতে ওখানে গেছে। আর টাঙ্গুয়ার হাওড়ে গিয়ে কেউ নাশকতার পরিকল্পনা করবে এমন অভিযোগও হাস্যকর। পরে সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তারা এটি পরিষ্কার করেছে যে, শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোনে প্রত্যাশিত কিছুই না পেয়ে তাদের সামনেই জব্দকৃত মালামাল হিসেবে সেগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড দিয়ে প্রিন্ট করা হয়েছে তাদের মামলা সাজানোর জন্য। আমরা বুয়েট প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, কোনো ধরনের রাজনীতি এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে আমাদের সন্তানেরা জড়িত নয়। তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলছি তারা সাধারণ শিক্ষার্থী মাত্র।
এই অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন জানিয়ে এ অভিভাবক বলেন, মামলার বিবরণীতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ঘটিয়ে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করা, জানমালের প্রতি ক্ষতি সাধন, রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডসহ ধর্মীয় জিহাদ সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অপরাধ ইত্যাদি অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই পুরো বিষয়টি আমাদেরকে প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
বুয়েট কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এমন বাস্তবতায় গতকাল সন্ধ্যায় আমরা কয়েকজন অভিভাবক বুয়েটের ভিসির দেখা করতে যাই। সেখানে গিয়ে ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের সঙ্গে দেখা হয় এবং তাকে পুরো বিষয়টি অবহিত করি। আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক আমাদের জানান যে, তাদেরও পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে গতকাল বিকেল চারটা বা পাঁচটার দিকে। সেসময় এরকম ষড়যন্ত্রমূলক প্রচেষ্টা কারা করছে এবং কোন উদ্দেশ্যে করছে এ বিষয়টি নিয়ে যে আমরা উদ্বিগ্ন এবং আমাদের সন্তানদের শিক্ষাজীবন ও ক্যারিয়ার হুমকির সম্মুখীন সেটা জানিয়েছি আমরা।
এই শিক্ষার্থীরা দেশের ভবিষ্যৎ উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
প্রসঙ্গত, সোমবার (৩১ জুলাই) দুপুরে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দিয়ে গ্রেফতার দেখানোর পর বিকেলে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানায় পুলিশ। দুপুরে ওই থানার এসআই রাশেদুল কবির বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলার এজাহারে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, জনসাধারণের জানমালের ক্ষতি, গোপন বৈঠক করে জিহাদ সৃষ্টির মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তাদের আটকের পর থেকে সোমবার দুপুরপর্যন্ত পুলিশের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কিছুই জানানো হয়নি স্থানীয় সাংবাদিকদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০২৩
এসকেবি/এসআইএস